রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৫৫ টন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নামল ভারতীয় বায়ুসেনার সি-১৭ বিমান। আর রাত পৌনে দশটার সময়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জানালেন, রোহিঙ্গা নিয়ে দু’দেশের অবস্থান একই। এই সঙ্কটের দিনে বাংলাদেশের মানুষের পাশে রয়েছে দিল্লি। মায়ানমার যাতে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়, সে জন্য দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্তরে তাদের ওপরে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দফায় দফায় ৭ হাজার টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ইনসানিয়ত’। তার সূচনায় বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে আসা প্রথম দফার ত্রাণ সামগ্রী বাংলাদেশের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে দেন হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। রাতে সুষমা যখন ফোন করেন, হাই কমিশনার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেই হাজির ছিলেন। হাসিনার উপ প্রেসসচিব নজরুল ইসলাম জানান— সুষমা বলেন, মায়ানমারকে বুঝতে হবে রোহিঙ্গারা তাদের নাগরিক। তাদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। শুধুমাত্র মানবিক কারণেই বাংলাদেশ তাদের সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। শেখ হাসিনা তাঁকে জানান, প্রায় চার লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর আশ্রয়শিবির গড়তে কক্সবাজারে প্রায় দু’হাজার একর জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের খাদ্য ও চিকিৎসা জোগাতে প্রশাসনের পাশাপাশি শাসক দলের কর্মীরাও পরিশ্রম করছেন। কিন্তু এই শরণার্থীরা দীর্ঘদিন থাকলে বাংলাদেশে বড়সড় সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: প্রদ্যুম্ন হত্যা রহস্য ভেদ করার ভার পেল সিবিআই
এর মধ্যেই একটি জার্মান সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রী হিসেবে কর্মরত মায়ানমারের দুই নাগরিককে কক্সবাজারের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশের অভিযোগ, এঁরা মায়ানমারের হয়ে চরবৃত্তি করছিলেন।
সংবাদ সংস্থার খবর— দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের বিষয়ে সরকার তাদের অবস্থান জানিয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দেবে। রোহিঙ্গাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেশে ফেরানোর যে নীতি দিল্লি নিয়েছে, তাকে চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছেন দুই রোহিঙ্গা শরণার্থী। প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এখন ভারতে রয়েছেন।