বোমা নয় তো! চাষের যন্ত্র উড়িয়ে দিল পুলিশ

গুয়াহাটি স্টেশনে শুক্রবার উদ্ধার হওয়া ‘বোমা’র কাহিনি সামনে আসায় মুখ পুড়ল অসম পুলিশের। বোমা ভেবে উড়িয়ে দেওয়া জিনিসটি যে আদতে ছিল কৃষি-যন্ত্র, তা প্রথমে ধরতেই পারল না পুলিশ। উল্টে গোটা দিন তারা কৃতিত্ব নিল— কী ভাবে শক্তিশালী বোমার হাত থেকে বাঁচানো গিয়েছে যাত্রিবাহী ট্রেন!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

এই ঠেলাগাড়ি থেকে উদ্ধার 'বোমা' (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র।

বলা হয়েছিল শক্তিশালী বোমা। পরে জানা গেল, সেটি ছিল কৃষিজমিতে ব্যবহারের স্প্রে-মেশিন!

Advertisement

গুয়াহাটি স্টেশনে শুক্রবার উদ্ধার হওয়া ‘বোমা’র কাহিনি সামনে আসায় মুখ পুড়ল অসম পুলিশের। বোমা ভেবে উড়িয়ে দেওয়া জিনিসটি যে আদতে ছিল কৃষি-যন্ত্র, তা প্রথমে ধরতেই পারল না পুলিশ। উল্টে গোটা দিন তারা কৃতিত্ব নিল— কী ভাবে শক্তিশালী বোমার হাত থেকে বাঁচানো গিয়েছে যাত্রিবাহী ট্রেন!

শুক্রবার সকালে গুয়াহাটি স্টেশনে পার্সেল নিয়ে যাওয়ার একটি ঠেলায় দাবিহীন ব্যাগের মধ্যে থেকে সন্দেহজনক শব্দ পেয়ে বোমাতঙ্ক ছড়ায়। পৌঁছয় বম্ব স্কোয়াড। ঘটনাস্থল পরির্দশনের পর শহরের পুলিশ কমিশনার, এডিজিপি পর্যায়ের অফিসাররা জানান, ব্যাগে প্রায় ১০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক রয়েছে। সম্ভবত আলফা জঙ্গিরা শিলচরগামী ট্রেনে বোমা রেখে নাশকতার ছক কষেছিল। অনেক কসরতের পর সেই ‘বোমা’ জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে দূরনিয়ন্ত্রিত ডিটোনেটরে ফাটিয়ে গর্বের হাসি হাসে পুলিশ।

Advertisement

কিন্তু রাতে ছবিটা বদলে যায়। জানা যায়, বোমা ভেবে যা ফাটানো হয়েছে তা আদতে চাষের জমিতে জল ছেটানোর যন্ত্র। ডাক বিভাগ থেকে পুলিশকে জানানো হয়, ওই পার্সেলটি মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরের একটি সংস্থা শিলচর হয়ে আইজলে পাঠাচ্ছিল। ৯ থেকে ১৭ অগস্ট পার্সেলটি ডাক বিভাগের রাজ্য সদর দফতর মেঘদূত ভবনে রাখা ছিল।

ভুল স্বীকার করে পুলিশ। তবে ভেঙেও মচকাতে চায়নি। তাদের দাবি, যে ভাবে পুলিশ, রেল পুলিশ, বম্ব স্কোয়াড সন্দেহজনক জিনিস চিহ্নিত করে ধ্বংস করেছে, তা তাদের পারদর্শিতাই প্রমাণ করে।

এরই মধ্যে অসম পুলিশকে আরও বিড়ম্বনায় ফেলেছে মহারাষ্ট্রের সংস্থাটি। ক্ষতিপূরণ চেয়েছে তারা। সংস্থার মালিক বিজয় বর্মা জানান, যন্ত্রটির দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। সেটি জমিতে জল ছেটানোর কাজে লাগে। তাঁর মতে, কোনও ভাবে পার্সেলে চাপ লেগে যন্ত্রটি চালু হয়ে ‘টিকটিক’ শব্দ বের হচ্ছিল। সে কারণেই সেটিকে টাইম-বোমা ভাবা হয়। তিনি জানান, এক বার দিল্লিতেও এমন কাণ্ড ঘটে। কিন্তু দিল্লি পুলিশ যন্ত্রটি নষ্ট করেনি। বিজয়বাবুর বক্তব্য, অসম পুলিশের তরফে কিছুটা ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। কারণ ফের একটি যন্ত্র তাঁকে মিজোরামের ক্রেতাকে পাঠাতে হবে।

অসম পুলিশের কয়েক জন কর্তা বোমা নিষ্ক্রিয়ক বাহিনীর সমালোচনা করে বলেন— ‘নিশ্চিত না হয়েই জিনিসটিকে বোমা বলে চিহ্নিত করে নষ্ট করে দেওয়া ঠিক হয়নি।’ এ দিন গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার হীরেন নাথ বিজয়বাবুকে ফোন করে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন