Delhi Election Results 2025

ভোটে না-লড়েও জিতলেন স্বাতী! ‘দল’ হারতেই ‘আপ’ সাংসদের পোস্টে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের ছবি

ভোটপর্বে বার বার দলের সমালোচনা করেছেন স্বাতী। আবর্জনা সঙ্কট, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, ব্যবহারের অযোগ্য জল— দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে দলের খুঁতগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন আপ-নেত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৫
Share:

স্বাতী মালিওয়াল। — ফাইল চিত্র।

দিল্লি ভোটের ফলাফল স্পষ্ট। দীর্ঘ ২৭ বছর পর রাজধানীতে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বিজেপি। আম আদমি পার্টি যে শুধু ‘গড়’ হারিয়েছে তা-ই নয়, খাস নয়াদিল্লিতে বিজেপির প্রবেশ বর্মার কাছে পর্যুদস্ত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। অথচ আপেরই রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল ‘ভাবলেশহীন’! বরং দলের হারের চিত্রটা স্পষ্ট হতেই সমাজমাধ্যমে মহাভারতে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের একটি ছবি পোস্ট করেছেন স্বাতী। বিশেষ অর্থবহ সেই ছবি নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনাও।

Advertisement

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আপ শিবিরে গোড়া থেকেই কেজরীওয়ালের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন স্বাতী। কেজরী ক্ষমতায় আসার পরেই দিল্লি মহিলা কমিশনের সভাপতি করা হয় তাঁকে। প্রায় ১০ বছর ওই পদে থাকার পর দলের টিকিটে রাজ্যসভার প্রার্থী হন স্বাতী। তবে তার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর। এমনকি, আবগারি দুর্নীতিতে কেজরীর গ্রেফতারি পর্বেও তাঁকে সামনে আসতে দেখা যায়নি।

স্বাতীর সেই পোস্ট। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

এর পর ২০২৪ সালের ১৩ মে। কেজরীর প্রাক্তন সচিব বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে নিগ্রহের অভিযোগ আনেন স্বাতী। অভিযোগ করেন, খাস মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনেই তাঁকে হেনস্থা করেছেন বৈভব। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৮ মে বৈভবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মালিওয়ালের দাবি ছিল, কেজরীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। অভিযোগ, বৈভব তাঁকে সাত-আটটি চড় এবং পেটে লাথি মারেন। ওই ঘটনার অব্যবহিত পরেই বৈভবের আচরণের নিন্দা করে মালিওয়ালের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আপ নেতারা। কিন্তু মাত্র তিন দিন যেতে না যেতেই অবস্থান পাল্টে ফেলে আপ শীর্ষ নেতৃত্ব! সাংবাদিক বৈঠক করে স্বাতীর যাবতীয় অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেন আপ নেত্রী তথা দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা। মালিওয়ালের অভিযোগের নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সে প্রশ্নও তোলা হয়। সেই ঘটনার জল গড়ায় অনেক দূর পর্যন্ত। এর পর থেকেই স্বাতীর সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে আপ নেতৃত্বের।

Advertisement

ভোটে না লড়লেও নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন বার বারই প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা করেছেন স্বাতী। রাজধানীতে আবর্জনা সঙ্কট, বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ব্যবহারের অযোগ্য জল— দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে আপ-সরকারেরই খুঁতগুলি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন আপ-নেত্রী। গত ৩ নভেম্বর আতিশীর বাসভবনের সামনে কালো, অপরিস্রুত জল ঢেলে বিক্ষোভও দেখান তিনি। সঙ্গে হুঁশিয়ারি দেন, ১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি না শুধরোলে ট্যাঙ্কভর্তি নোংরা জল এনে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে দাঁড় করিয়ে দেবেন! দিল্লির এই ‘বেহাল দশা’র বিপরীতে কেজরীর বিলাসবহুল জীবনযাপন নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি আপ সাংসদ।

দলের এত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও কেন আপের টিকিটে পাওয়া রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়েননি? আপ-নেত্রীর কথায়, ‘‘কেন নিজের দল ছাড়ব? গত ১৮ বছর ধরে ঘাম-রক্ত দিয়ে দল করেছি। যা কিছু ভুল, তা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলবই।’’ কখনও আবার বলেছেন, ‘‘আমি বরাবরই লড়াকু ছিলাম। যাঁরা ভেবেছিলেন আমাকে শেষ করে দিয়েছেন, তাঁদের জানাই, এখনও আমি শেষ হয়ে যাইনি! এক সময় অন্যদের হয়ে লড়েছি, এখন নিজের জন্যও লড়ব।’’ তাই হয়তো দলের হারের পর দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের প্রসঙ্গ তুলে দলের অন্দরে নিজের অপমানের কথা আরও এক বার মনে করাতে চেয়েছেন স্বাতী। মনে করিয়ে দিয়েছেন, তিনি ভোলেননি!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement