জেএনইউয়ে জোট বেঁধে সঙ্ঘকে ঠেকাল বামেরা

কানহাইয়া কুমার বিতর্ক নিয়ে সুস্পষ্ট রায়ই দিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর পড়ুয়ারা। ছাত্র সংসদের ভোটে হাত মিলিয়ে লড়াই করে সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-কে কার্যত মুছে দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখল বাম সংগঠনগুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৭
Share:

কানহাইয়া কুমার।—ফাইল চিত্র

কানহাইয়া কুমার বিতর্ক নিয়ে সুস্পষ্ট রায়ই দিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর পড়ুয়ারা। ছাত্র সংসদের ভোটে হাত মিলিয়ে লড়াই করে সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-কে কার্যত মুছে দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখল বাম সংগঠনগুলি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনেও গেরুয়া দেওয়ালে সিঁধ কেটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন।

Advertisement

গত কালই ভোট হয়েছিল দিল্লির দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ দুপুরের মধ্যেই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল প্রকাশ হয়ে যায়। এবিভিপি তাতে সভাপতি, উপসভাপতি ও সম্পাদকের পদ ধরে রাখলেও যুগ্ম সম্পাদকের পদটি কেড়ে নিয়েছে কংগ্রেসের এনএসইউআই। কিন্তু এ বারে প্রচারের আলোর বৃত্তে ছিল জেএনইউ-র ভোট। কারণ এ বছরের গোড়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি বাম ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমার ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ‘দেশ-বিরোধী স্লোগান’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্যাপক হাঙ্গামা শুরু করেছিল এবিভিপি ও সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখা। কানহাইয়াদের জেলে ভরা হয়। ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এ বারে কানহাইয়া কুমার ভোট-ময়দানে ছিলেন না। এবিভিপিকে ঠেকাতে জোট বেঁধেছিল এত কাল মুখোমুখি লড়াই করে আসা বাম সংগঠন এসএফআই ও আইসা। আগের বছর যে কটি আসন জিতেছিল, এ বার সেগুলিও হারিয়েছে এবিভিপি। শেষ পাওয়া খবরে বাম জোটই ধরে রাখছে জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ। সভাপতি। সহ-সভাপতি, সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক— সব ক’টি পদেই বাম জোটের প্রার্থীরা বড় ব্যবধানে জিতেছে। ছাত্র প্রতিনিধিদের ২৪টির মধ্যে ২২টি আসন বামেদের দখলে। শুধু সংস্কৃত বিভাগে একটি আসন পেয়েছে এবিভিপি।

আবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দু’বছর ধরে প্রধান চারটি পদেই সঙ্ঘের ছাত্ররা একাধিপত্য ধরে রাখলেও, এ বারে যুগ্ম সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছে কংগ্রেসের এনএসইউআই-এর মোহিত গরিদ। তবে এ বারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে সব থেকে চমক দিয়েছে ‘নোটা’। প্রায় ১৮ হাজার পড়ুয়া নোটায় ভোট দিয়ে জানিয়েছেন কোনও প্রার্থীই তাঁদের পছন্দ নয়।

Advertisement

এনএসইউআই-এর জয়ী প্রার্থী মোহিতের কথায়, ‘‘বিভ্রান্তির ফলেই এত ভোট পড়েছে নোটায়। এবিভিপি যে সব পদে জিতেছে, ভোটের ব্যবধান খুব কম। আগামী বছর চারটি পদেই জিতবে এনএসইউআই ।’’

কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্ঘের রমরমা বেড়ে। গোটা দেশে যে ভাবে মোদী-জাদু ফিকে হচ্ছে, তার প্রভাব পড়ছে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটেও। দুই ভোটে এবিভিপি-র হাল দেখে বিজেপি নেতৃত্বও ব্যাকফুটে। অন্য বছর অমিত শাহ, অরুণ জেটলিরা যে ভাবে জয়ী ছাত্র নেতাদের সংবর্ধনা দেন, এ বার সে পথে হাঁটেননি তাঁরা। বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদের ভোট বড় কিছু নয়। সব কিছুর পরেও বামেরা একটি-দু’টি রাজ্যেই সীমাবদ্ধ। জেএনইউ-এর জয় বামেদের সান্ত্বনা পুরস্কার। এই নিয়েই তাঁরা সন্তুষ্ট থাকুন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন