Jammu and Kashmir Terror Attack

‘বেঁচে রয়েছি এই দিনটার জন্যই’! জঙ্গিহানায় নিহত একমাত্র কাশ্মীরি আদিলের বাবা কেন বললেন এ কথা

গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিহানায় যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আদিলই একমাত্র কাশ্মীরি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:১৯
Share:

ছেলে সৈয়দ আদিল হুসেন শাহের মৃত্যুতে গর্বিত তাঁর বাবা সৈয়দ হায়দার শাহ। ছবি: সংগৃহীত।

জঙ্গিদের গুলি থেকে বাঁচতে তখন এ দিক-ও দিক দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন পর্যটকেরা। সেই সময় তিনিই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। বন্দুক কেড়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জঙ্গিদের উপর। জঙ্গিরা অবশ্য রেয়াত করেনি। তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল। টাট্টু ঘোড়ার সহিস সেই সৈয়দ আদিল হুসেন শাহের মৃত্যুতে গর্বিত তাঁর বাবা সৈয়দ হায়দার শাহ। কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধ বললেন, ‘‘আমার ছেলের এই আত্মত্যাগে আমি সত্যিই গর্বিত। হয়তো এই দিনটার জন্য, এই গর্ব অনুভব করব বলেই বেঁচে রয়েছি। নয়তো ছেলের লাশ দেখার পরেই আমার মরে যাওয়ার কথা ছিল।’’

Advertisement

গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিহানায় যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে আদিলই একমাত্র কাশ্মীরি। বৈসরন উপত্যকায় টাট্টুতে চাপিয়ে পর্যটকদের নিয়ে যেতেন আদিল। ঘরে ফিরতেন সন্ধ্যার পরে। সে দিন অবশ্য আর ফেরা হয়নি। দুপুরে জঙ্গি হামলার কথা জানতে পেরে পরিবারের লোকেরা আদিলকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু ফোন বেজে গিয়েছিল। এর পর রাতের দিকে তাঁরা থানায় যান। পরে হাসপাতালে। সেখানে তাঁরা জানতে পারেন, জঙ্গিদের গুলিতে আদিলও নিহত। পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে তাঁর। বাবা হায়দার বলেন, ‘‘ওর জন্য কিছু লোকের তো প্রাণ বেঁচেছে।’’

বৈসরন থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে হাপতনার গ্রামে আদিলদের বাড়ি। এখনও বুক চাপড়ে কেঁদে চলেছেন আদিলের মা বেবি জান। তিনি বলেন, ‘‘দিনে ৩০০ টাকা রোজগার করত আদিল। ওই টাকা দিয়ে ভাত-ডাল জুটত আমাদের। এখন আমাদের সংসার চলবে কী করে জানি না। ওষুধ কিনব কী করে?’’

Advertisement

হায়দারের মতে, “জঙ্গিরা যে আদিলের মতো স্থানীয় এক সহিসকেও মারল, তা থেকে স্পষ্ট, তারা পর্যটকদের নয়, কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পটাকেই হত্যা করতে চাইছে। আমাদের এই কান্না, হাহাকার, শুধু আদিলের জন্য নয়। নিহত সব পর্যটকের জন্য। আমার বড় ছেলের মৃত্যুর পরে কী ভাবে আমাদের পরিবারের পেট চলবে জানি না। জানি না, আবার কবে পর্যটকেরা এখানে সাহস করে ফিরে আসবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement