M K Stalin

রাজ্যপালের ফেরানো ১০ বিল পাশ স্ট্যালিনের

তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারের সঙ্গে গত কয়েক বছরে একাধিক বার বিরোধে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল রবি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৫:৫০
Share:

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যপাল আর এন রবির সঙ্গে রাজ্য সরকারের চলতি বিরোধে এ বারে কৌশলী চাল দিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরেও তামিলনাড়ু বিধানসভায় পাশ হওয়া ১০টি বিল সই না করেই ফেরত পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল রবি। এ বারে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে ফের বিলগুলি পাশ করালেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করে উপাচার্যদের আচার্য হিসেবে নিয়োগের কথা রয়েছে এ দিন পাশ হওয়া বিলগুলির মধ্যে।

Advertisement

দিন কয়েক আগেই বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালের আটকে দেওয়া নিয়ে পঞ্জাব সরকারের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে রাজ্যপালের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছিল, রাজ্যপাল এ ভাবে কাজ করতে পারেন না। বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করছে, নরেন্দ্র মোদীর জমানায় রাজ্যগুলিকে বিপাকে ফেলতে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন কেন্দ্রের নিয়োগ করা প্রতিনিধি অর্থাৎ রাজ্যপাল। পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ু, পঞ্জাব— সর্বত্রই বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নির্দেশে বহু ক্ষেত্রেই এক্তিয়ার বহির্ভুত ভাবে রাজ্য সরকারের কাজে নাক গলাচ্ছে রাজভবন। আর রাজ্য সরকার বনাম রাজভবনের এই সংঘাতে বহু ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতাও তৈরি হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারের সঙ্গে গত কয়েক বছরে একাধিক বার বিরোধে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল রবি। এ দিন যে ১০টি বিল বিধানসভায় ফের পাশ করানো হল, তার মধ্যে ২০২০ সালে দু’টি, ২০২২ সালে ছ’টি এবং ২০২৩ সালে আরও দু’টি বিল সই না করে রাজ্যপাল আটকে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ করেছে শাসক ডিএমকে। এর মধ্যে দু’টি বিল পূর্বতন এআইএডিএমকে সরকারের আমলে পাশ হয়েছিল। এ দিন কার্যত ঠান্ডা ঘরে চলে যাওয়া বিলগুলিকে নতুন করে ফের পাশ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বার্তা দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বিধানসভায় রাজ্যপালকে বিঁধে নিজের বক্তৃতায় বলেন, কোনও কারণ ছাড়াই বিধানসভায় পাশ হওয়া কোনও বিল আটকানো একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘‘উনি (রাজ্যপাল) নিজের খেয়ালখুশিতে চলে বিলগুলি সই না করেই ফেরত পাঠিয়েছেন। বিলে সায় না দেওয়া অগণতান্ত্রিক এবং জনবিরোধী। বিলগুলি আবার বিধানসভায় পাশ হয়ে ওনার কাছে গেলে উনি আর সই না করে পারবেন না।’’ এর আগে ডাক্তারি পরীক্ষা নিট সংক্রান্ত একটি বিল রাজ্যপাল আটকে রাখার পরে তা ফের বিধানসভায় পাশ করিয়ে তাঁর কাছে পাঠানো হলে তিনি তাতে সই করে সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছেন।

কেন্দ্রের নিয়োগ করা রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করার পাশাপাশি একাধিক বিরোধী-শাসিত রাজ্য উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে বা আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করেছে। গুজরাতও এক সময় মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে নিয়োগের আইন করেছিল।

এ দিন বিজেপি নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েছে তামিলনাড়ুতে তাদের জোটসঙ্গী এডিএমকে-র ভূমিকা। বিশেষ অধিবেশনে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে এডিএমকে ১০টি বিল পাশ করানো নিয়ে প্রস্তাবে সরকারপক্ষকেই সমর্থন জানিয়েছে। পরে অবশ্য অন্য একটি কারণ দেখিয়ে তারা কক্ষত্যাগ করে।

ডিএমকে সূত্রের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরে তড়িঘড়ি বিলগুলি রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠিয়ে তামিলনাড়ুর রাজভবন দেখাতে চেয়েছিল, তাদের কাছে কোনও বিল আটকে পড়ে নেই। কিন্তু স্ট্যালিন বিলগুলি বিশেষ অধিবেশন ডেকে পাশ করিয়ে তা রাজ্যপালের কাছে ফের পাঠালে তাঁকে সই করতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন