তথাগত রায়। ফাইল চিত্র।
যত কাণ্ড যেন ত্রিপুরায়। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসতে না বসতেই লাগামহীন কথাবার্তায় খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বিপ্লব দেব। বিতর্কের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রইলেন না ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়ও। সে রাজ্যে বিজেপি সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের এক বিজেপি কর্মীকে নিয়োগের জন্য, তিনি গোপনে চিঠি লিখে সুপারিশ করেছেন বিপ্লব দেবকে। কিন্তু ‘গোপন কথাটি’ গোপনে থাকেনি। প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে হইচই।
সিপিএম-সহ অন্যান্য বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্যপাল যদি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে না পারেন, তবে তা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তথাগত রায়কে বিজেপির প্রচারক বলে আঙুল তুলে পোস্ট ছড়াচ্ছে।
আর যাঁকে ঘিরে এই বিতর্ক, তিনি কিন্তু চুপ করে যাননি। উল্টে, সমালোচকদের পাল্টা আক্রমণে নেমেছেন তথাগত। টুইট করে আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি হেনেছেন বিদ্রুপও— ‘‘...সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং বৈধ কাজ (করেছি)। এখন একজন কমরেড সেই চিঠিটি আবিষ্কার করেছেন এবং কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের উল্লাসে লাফালাফি করে বেড়াচ্ছেন।’’ এই টুইটে তথাগত স্বীকার করে নিয়েছেন যে, এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিজেপি কর্মীর নাম তিনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছেন উপদেষ্টা পদে নিয়োগের জন্য।
আরও পড়ুন: যোগীর হাতেই আমার ভবিষ্যৎ: কাফিল খান
আরও পড়ুন: কথায় মণি-মাণিক্য! বিপ্লবকে ডেকে পাঠালেন নরেন্দ্র মোদী
সম্পতি বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের গ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল। বিজেপি নেতাকর্মীদের তিনি প্রকাশ্যেই পরামর্শ দেন, ‘‘ভোটে জেতার জন্য গ্রামে যান। গরিব ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলুন। ওদের কোলে নিন। নরেন্দ্র ভাইয়ের স্বপ্ন সফল করতে প্রচারে ঝড় তুলুন।’’ একজন রাজ্যপাল হয়ে কী করে একটি রাজনৈতিক দলকে এমন পরামর্শ দিলেন তিনি, তা নিয়ে রীতিমতো সোরগোল হয়। আনন্দীবেনের পর প্রায় একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন আর এক রাজ্যপাল এবং প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথাগত রায়।
গত ১৪ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি কর্মী সর্বদমন রায়ের বায়ো ডেটা বিপ্লব দেবের কাছে ফরওয়ার্ড করেন তথাগত। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসেবে কাজ করার সময় সর্বদমনের সঙ্গে আমার আলাপ হয়। ওঁকে আমি ১৯৯০ সাল থেকে চিনি। এক জন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে উনি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। ত্রিপুরা সরকারের হিসেব সংক্রান্ত ব্যাপার কিংবা উদ্যোগপতিদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার কাজে উনি উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুক।’’ বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বিপ্লব দেবকে অনুরোধ করেন তথাবত রায়।
সিপিএমের অভিযোগ, ত্রিপুরায় রাজ্যপালের পদকে আগে থেকেই রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছিল বিজেপি। ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই প্রবণতা মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।