National news

স্বপ্নের উড়ান! চা বিক্রেতার মেয়ে যুদ্ধবিমানের পাইলট

মধ্যপ্রদেশের নিমাচের বাসিন্দা আঁচল গঙ্গওয়াল। বাবা চা বিক্রি করেন। কিন্তু মেয়ের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি। আঁচল ছোটবেলা থেকেইস্কুলের টপার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভোপাল শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ১৩:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

উত্তরাখণ্ডের বন্যা তাঁর ভবিষ্যত্ ঠিক করে দিয়েছিল। দেশের সেবায় নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল সেই ঘটনা। অনেক লড়াই, জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্ন সাকার করলেন আঁচল। ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের পাইলট। সারা দেশ থেকে যে ২২ জন নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের অন্যতম।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের নিমাচের বাসিন্দা আঁচল গঙ্গওয়াল। বাবা চা বিক্রি করেন। কিন্তু মেয়ের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি। আঁচল ছোটবেলা থেকেইস্কুলের টপার। শুধু পড়শোনাতেই নয়, স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্কেটবল এবং ৪০০ মিটার দৌড়েও সফল তিনি।

সাল ২০১৩। তখন দ্বাদশ শ্রেণিতে আঁচল। সে বছরই উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন অনেক পুণ্যার্থী। সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল ছাত্রীটিকে। আর এখান থেকেই নিজের স্বপ্ন তৈরি করে ফেলেছিলেন তিনি। যে ভাবে দেশের সেনা জওয়ানরা উদ্ধারকাজ চালিয়েছিলেন, সেটাই আঁচলের জীবনের প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার দৃঢ়সঙ্কল্প শুরু তখন থেকেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: ছুটির দরখাস্ত একেই বলে, কনস্টেবলের মিলল দেড় মাসের ছুটি

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়। তার পর চাকরির জন্য প্রস্তুতি— এ সবের মধ্যেও কিন্তু হারিয়ে যায়নি তাঁর স্বপ্ন। পুলিশের সাব ইনস্পেক্টরের চাকরিও পেয়ে যান। কিন্তু উপলব্ধি করেছিলেন ওই চাকরির যে টাইট সিডিউল, তাতে নিজের স্বপ্ন সাকার করা কঠিন। ছেড়ে দেন চাকরিটা। ঘটনাচক্রে লেবার ইনস্পেক্টরের চাকরিটাও হয়ে যায় তাঁর।সেই চাকরি করতে করতেই বিমানবাহিনীর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু।

এয়ারফোর্স কমন অ্যাডমিশন টেস্ট-এ পাশ করেন আঁচল। তিনি জানান, পরীক্ষাটা মোটেই সহজ ছিল না। পাঁচ বার ইন্টারভিউ দিয়েও সাফল্য আসেনি। তবু হাল ছাড়েননি। ছ’বারে তিনি সফল হন। তিনি এখন ভারতীয় বায়ুসেনার এক জন পাইলট। আগামী ৩০ জুন থেকে হায়দরাবাদে প্রশিক্ষণ শুরু হবে তাঁর। সেই সঙ্গে শুরু হবে তাঁর স্বপ্নের উড়ান।

আরও পড়ুন: জম্মুর সভায় অমিতের লক্ষ্য মুফতি-কংগ্রেস

আঁচলের বাবা সুরেশ গঙ্গওয়াল নিমাচ বাসস্ট্যান্ডের সামনে চায়ের দোকান চালান। তাঁর দুই মেয়ে, এক ছেলে। আঁচল মেজো। সুরেশ বলেন, “আর্থিক অনটনের মধ্যেও সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। ঋণ নিয়ে আঁচলকে কোচিংয়ের জন্য ইনদওরে পাঠিয়েছি। বড় ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়িয়েছি।”

মেয়ের সাফল্যে তাঁর চোখে মুখে পরিতৃপ্তি। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে অভিনন্দন। পাড়া-পড়শি, আত্মীয়-স্বজন তো আছেনই, খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান আঁচলকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন