Coronavirus

নালীতে রক্ত জমে গিয়ে বাড়ছে বিপদ

করোনামুক্ত হওয়ার পরেও চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো অন্তত চার থেকে ছয় সপ্তাহ  রক্তের ওষুধ খেয়ে যাওয়া উচিত।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৩:২৪
Share:

ফাইল চিত্র

গুরুতর অসুস্থ করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তবাহী নালীতে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েই বেশির ভাগ সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখা যাচ্ছে, নালীতে রক্ত জমাট বেঁধেই ডেকে আনছে হার্ট ফেলিওর, স্ট্রোক। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস। বিকল হচ্ছে কিডনি। তাই করোনা রোগীদের শ্বাসকষ্ট হওয়া মাত্র রক্তের কোঅ্যাগুলেশন (জমাট বাঁধা) পরীক্ষা করে রক্ত তরল করার ওষুধ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

আমেরিকার নিউরোরেডিয়োলজি জার্নালে সম্প্রতি ছাপা প্রবন্ধে নিউ ইয়র্কের ছ’টি হাসপাতালে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত আসা স্ট্রোকের রোগীদের পরীক্ষা করে দেখানো হয়েছে, যে সব রোগী মস্তিষ্কের রক্তবাহী নালীতে রক্ত জমার বাঁধার কারণে স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই করোনা সংক্রমিত ছিলেন। এখানে এমস-এর মেডিসিন ও সংক্রমণ বিভাগের অধ্যাপক আশুতোষ বিশ্বাসের মতে, একাধিক অঙ্গ বিকলের জন্যও অনেকাংশেই দায়ী থাকে জমাট বাঁধা রক্ত। সে কারণে করোনা উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের কোনও শারীরিক অসুবিধা হলে শুরুতেই কোঅ্যাগুলেন্ট প্রোফাইল করে নেওয়া উচিত। রক্তে কোনও অস্বাভাবিকতা রয়েছে কি না, তা এতে ধরা পড়বে। করোনামুক্ত হওয়ার পরেও চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো অন্তত চার থেকে ছয় সপ্তাহ রক্তের ওষুধ খেয়ে যাওয়া উচিত।

এ দেশে প্রায় আশি শতাংশ করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি উপসর্গহীন। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে যাঁদের দেহে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে, দেরি না করে তাঁদের চিকিৎসা শুরু করার সওয়াল করছেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকদের মতে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকলে শরীরের শিরা-ধমনীর রক্তপ্রবাহে তার প্রভাব পড়ে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের দেহে সাইটোকাইন স্টর্ম লক্ষ করা যায়। সেটা কী? সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে সাইটোকাইন নামে রাসায়নিকের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এতে শরীরে প্রদাহ হয়। প্রদাহ বেশি হলে রক্ত জমাট বেশি বাঁধে। জমাট রক্তের ডেলা রক্তবাহী নালীতে জমে হার্ট ফেলিওর-এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। রক্তের ডেলা ফুসফুসে পৌঁছে ব্যাঘাত ঘটায় ফুসফুসের কার্যকলাপে। বিকল করে দেয় কিডনি। মস্তিষ্কে পৌঁছে ঘটায় ব্রেন স্ট্রোক।

Advertisement

চিকিৎসকেরা লক্ষ করেছেন, সুস্থ হয়ে যাওয়া কোভিড রোগীদের একাংশেরও ফুসফুসে স্কার বা ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছে। যে করোনা আক্রান্তরা নিউমোনিয়া বা প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগে সেরে উঠেছেন, তাদের ফুসফসে এ ধরনের ক্ষত দেখা যাচ্ছে। এমস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একাধিক কোভিড রোগী সুস্থ হয়ে যাওয়ার দু’তিন মাস পরেও সিটি স্ক্যানে তাঁদের ফুসফুসে ওই স্কার ধরা পড়ছে। পরবর্তী সময়ে ওই সব রোগীরা প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারেন। তাই তাঁদের নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকরা।

আরও পড়ুন: টিকটক, শেয়ারইট ছাড়াও বাকি ৫৭টি নিষিদ্ধ চিনা অ্যাপ কী কী দেখে নিন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন