andaman

Andaman: সাড়ে তিন দশক ‘বন্দি’ আন্দামানে, মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় অবশেষে ঘরে ফিরলেন বৃদ্ধ

কলকাতার একটি জাহাজ সংস্থায় শ্রমিকের চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন আন্দামানে। সেই সংস্থা এক বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেলে পেট চালাতে ভিক্ষা শুরু করেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রাঁচী শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি

সঙ্গী বলতে একটি রেডিয়ো। আর দিনভর খাটনির বিনিময়ে দু’টি খাবার। চার দিকে সমুদ্রের জল। তার মধ্যেই দিন আসে, দিন যায়। সে সব জীবন পিছনে ফেলে আবার যে কোনও দিন নিজের গ্রামের ঘরবাড়ি, পরিবার, সন্তানদের মুখ দেখতে পাবেন, তা গত সাড়ে তিন দশকে ভাবতেই পারেননি ঝাড়খণ্ডের গুমলা জেলার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা ফুচা মাহলি। সেই স্বপ্ন পূরণের আনন্দে কথা বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় গলা বুজে আসছিল ৭০ বছরের এই বৃদ্ধের।

Advertisement

নিজেই জানালেন, সেই কবে কলকাতার একটি জাহাজ সংস্থায় শ্রমিকের চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন আন্দামানে। সেই সংস্থাটি এক বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেলে পেট চালাতে ভিক্ষা করতে শুরু করেন ফুচা। কারণ আন্দামান থেকে ঝাড়খণ্ডের গ্রামে ফেরার পয়সাটুকুও যে ছিল না। তার মধ্যেই সুদীপ নামে স্থানীয় এক মহাজন তাঁর কাছে থাকা সব কাগজপত্রও কেড়ে নেয়। বাধ্য তার কাছেই দু’বেলা খেতে দেওয়ার চুক্তিতে কাজ করতে শুরু করেন ফুচা। সেই শুরু। কাঠ কাটা থেকে শুরু করে প্রায় সব রকমের কাজই ফুচাকে দিয়ে করিয়ে নিত সেই মহাজন। সেখানে কার্যত ক্রীতদাসের জীবন কাটাতে হয়েছে তাঁকে।

বাড়ি ফেরার আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলেন ফুচা। কিন্তু হাল ছাড়েনি তাঁর পরিবার। নানা জায়গায় ছোটাছুটি করতে শুরু করেন ফুচার স্ত্রী-সন্তান। তাঁরা পাশে পান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শুভ সন্দেশকে। তাদের সাহায্যেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের কাছে পৌঁছয় ফুচার কাহিনি।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শ্রম দফতর সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার পর বেশ কিছু দিন ধরে সন্ধান চালানোর পরে খোঁজ মেলে ফুচার। আন্দামান থেকে বিমানে চড়িয়ে তাঁকে ফেরানো হয় রাঁচীতে। সেখানে বিমানবন্দর থেকেই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে নিয়ে যাওয়া হয় ফুচাকে। তাঁকে ফেরানোর ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় উদ্যোগ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির অবদানের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ফুচা এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা। রাঁচী থেকে নিজের গ্রামে ফিরেচেন ফুচা। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য শ্রম দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন, ফুচা এবং তাঁর পরিবারকে সব রকম সাহায্য করতে। আপাতত বিশ্রাম। যখন আন্দামানে গিয়েছিলেন তখন ফুচার বয়স ছিল তিরিশের কোঠায়। আজ তিনি বৃদ্ধ। বয়স প্রায় ৭০। এই অবস্থায় আর কাজ নয়। বাকি জীবনটুকু বিশ্রাম নিয়েই কাটাতে চান ফুচা মাহলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন