আর দেখা হবে না, মৃত্যুর আগে নার্সের শেষ চিঠি স্বামীকে

মনে হয় না তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে। ছেলেদের দেখো।’’ নিপা (এনআইভি) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেরলের সেই নার্স লিনি পুতুসেরির মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ। তাঁর লেখা ওই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোঝিকোড় শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৮ ০৩:৫৩
Share:

লিনির স্বামী ও দুই ছেলে

মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে লেখা একটা চিঠি। মৃত্যু আসন্ন বুঝতে পেরেই কাতর আর্তি স্বামীর কাছে— ‘‘আমার সময় হয়ে এল। মনে হয় না তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে। ছেলেদের দেখো।’’ নিপা (এনআইভি) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কেরলের সেই নার্স লিনি পুতুসেরির মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ। তাঁর লেখা ওই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।

Advertisement

সোমবার মারা যান তিনি। কোঝিকোড়ের পেরামব্রার ইএমএস মেমোরিয়াল হাসপাতালে কাজ করতেন। নিপায় আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে চলে গেলেন নিজেই। আরও দুই নার্স নিপার হানায় কাবু বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।

দিন কয়েক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন লিনি। কোঝিকোড়ে প্রথম নিপা হামলার খবর মেলে লিনির দুই ভাই আক্রান্ত হওয়ার পরেই। ২৮ বছরের লিনির রক্ত এবং দেহরসের নমুনা এখনও মেলেনি। তবে নিপা ভাইরাসেই তাঁর মৃত্যু বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সতর্কতা বজায় রেখে দ্রুত লিনির অন্ত্যেষ্টি হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে রক্তাক্ত তুতিকোরিন, আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের গুলি, হত ৯

গত ১৬ মে জ্বর নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন লিনি। স্বামী সজীশ বলেছেন, স্ত্রীর শরীর ভাল নেই শুনে তিনি বাহরাইন থেকে উড়ে আসেন দু’দিন আগে। তবু স্ত্রীকে শেষ দেখার সুযোগ পাননি। স্মৃতি বলতে এখন লিনির হাতে লেখা সেই চিঠি। চিঠি হাতে সজীশ বলছেন, ‘‘জানি না কী ভাবে ছেলেদের (পাঁচ বছরের রিতুল আর দু’বছরের সিদ্ধার্থ) দেখভাল করব।’’ এক বছর এই হাসপাতালে কাজ করছিলেন লিনি। বেঙ্গালুরু থেকে নার্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু দিন পরে ইএমএস মেমোরিয়াল হাসপাতালে কাজ পান। সংসার চালাতেন তিনিই। পরে সজীশকে বিয়ে করেন।

কোঝিকোড় এবং মলপ্পুরম জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট ১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর মধ্যে নিশ্চিত ভাবে নিপার বলি দশ জন। বাকিদের মৃত্যুতে সন্দেহ এই ভাইরাসকেই। একটি সূত্রে দাবি, কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজে নিপায় আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২২ জন ভর্তি রয়েছেন। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজার দাবি, ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজকে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে। তবে আজ নতুন কোনও রোগীর আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি।’’ ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল-এর বিশেষজ্ঞ দল এবং এইমসের উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসক দল কেরলে পৌঁছেছেন। কেরল সরকারের সম্মতি পেয়ে গোরক্ষপুরের চিকিৎসক কাফিল খানও যাচ্ছেন কোঝিকোড়ে। বিআরডি হাসপাতালে শিশু-মৃত্যুর ঘটনায় জামিনে আছেন কাফিল।

কোঝিকোড়ের একটি বাড়ি থেকে বাদুড়ে খাওয়া আম উদ্ধার করেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। ওই বাড়িতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে নিপায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন