Coronavirus in India

শিশুদের টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি আছে কি, প্রশ্ন

ভারতে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে শিশু ও নাবালকেরা বেশি সংক্রমিত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২১ ০৬:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

৪ জুন: শিশু ও নাবালকদের শরীরে কোভ্যাক্সিন টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এই মাসেই শুরু করেছে ভারত বায়োটেক। আর এক ভারতীয় সংস্থা জ়াইডাস ক্যাডিলার জ়াইকোভ-ডি টিকার পরীক্ষা ইতিমধ্যেই প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের উপরে চলছে। এর পরে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সিদের নিয়ে টিকা পরীক্ষার পরিকল্পনা আছে জ়াইডাসের। এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, এ দেশে ফাইজ়ারের টিকা এলে শিশুদের টিকাকরণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সুবিধে হতে পারে।

Advertisement

ভারতে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে শিশু ও নাবালকেরা বেশি সংক্রমিত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই শিশুদের টিকাকরণের বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। উল্লিখিত তিনটি সম্ভাবনা থেকে বলা যায়, শিশুদের উপরে প্রয়োগের জন্য কোভ্যাক্সিন, জ়াইকোভ-ডি এবং ফাইজ়ারের টিকা হয়তো এ দেশে অনুমোদন পাবে। কিন্তু শিশুদের টিকার সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকবে তো?

টিকার অভাবে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকাকরণ কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে গোটা দেশে। ধাক্কা খেয়েছে ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের টিকাকরণও। বস্তুত, কেন্দ্র আজ বলে দিয়েছে, টিকাকরণ যাতে বেশি সংখ্যায় হয়, তা নিশ্চিত করতে ভারতকে এখন সময় কিনতে হবে— অর্থাৎ কন্টেনমেন্টের কড়াকড়ি এবং কোভিড আচরণবিধি পালনের মধ্য দিয়েই ঠেকিয়ে রাখতে হবে অতিমারিকে। প্রশ্ন হল, এই পরিস্থিতিতে শিশুদের বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ চালু হয়ে গেলে কি অন্যান্য গোষ্ঠীর টিকাকরণের মতোই অব্যবস্থা প্রকট হয়ে উঠবে? বিশেষজ্ঞদের কারও কারও মতে, একাধিক সংস্থার টিকা দিয়ে এই পর্ব চালু করা গেলে তবুও হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ধরা যাক, শুধুমাত্র কোভ্যাক্সিন দিয়েই শিশুদের টিকাকরণ শুরু করে দেওয়া হল। সে ক্ষেত্রে ওই একটি মাত্র সংস্থা পর্যাপ্ত টিকা জুগিয়ে উঠতে পারবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। আরও প্রশ্ন হল, শিশুদের টিকা কি কেন্দ্র নিখরচায় দেবে? নাকি তার জন্যও আমজনতাকে টাকা খরচ করতে হবে?

Advertisement

টিকার জোগানের প্রশ্নেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলির জন্য আইনি রক্ষাকবচ ও জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্রের বিষয়টি। ফাইজ়ার-মডার্নার মতো বিদেশি সংস্থা ওই রক্ষাকবচ চেয়ে চাপ বাড়িয়ে চলেছে। এমসের ডিরেক্টর গুলেরিয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘অতীতেও এমন হয়েছে যে, আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত টিকাকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। মনে হয়, আইনি সুরক্ষার বিষয়টাও মিটে গিয়েছে। কাজেই আমার মনে হচ্ছে, শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ফাইজ়ারের টিকা আমরা শীঘ্রই পাব।’’

একটি সূত্রের দাবি, জ়াইকোভ-ডি টিকার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র চেয়ে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কাছে আবেদন করতে চলেছে জ়াইডাস ক্যাডিলা। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শরভিল পটেল বলেন, ‘‘টিকার সুরক্ষার দিকটি ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। কার্যকারিতা সংক্রান্ত তথ্য এসে গেলেই তা জমা দিয়ে আমরা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ার পথে এগোব। আমাদের বিশ্বাস, এই বছরের শেষে আমরা পাঁচ কোটি ডোজ় টিকা তৈরি করতে পারব। সম্ভব হলে পরবর্তী ছ’মাসে তা আরও বাড়ানো যেতে পারে।’’ এই পাঁচ কোটির মধ্যে শিশুদের টিকাও থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement