ভাইয়ের কফিন কাঁধে বিশ্বাসকুমার রমেশ। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
কপালে, নাকে এবং কানে ব্যান্ডেজ। ২৪ ঘণ্টাও হয়নি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বুধবার ওই অবস্থাতেই ভাইয়ের মরদেহ কাঁধে নিলেন বিশ্বাসকুমার রমেশ— অহমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত যাত্রী। বিমান দুর্ঘটনায় মৃত ভাইয়ের মরদেহে কাঁধ দিতেই ভেঙে পড়লেন ৪০ বছরের যুবক। তাঁকে সামলাতে গিয়ে কান্না সামলাতে পারলেন না অন্যান্য আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধব।
মঙ্গলবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ওই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। অন্য দিকে, ডিএনএ পরীক্ষার পরে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত অজয়ের দেহ বুধবার তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দিউতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়েছে তাঁর। ভাইয়ের কফিনে কাঁধ দিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন জখম বিশ্বাসও। তাঁর পরনে ছিল সাদা ধুতি। কাছা গলায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে বার বার মাথা ঝাঁকাতে দেখা যায় তাঁকে।
মাত্র ছ’দিন আগে জখম হয়েছেন। সেই ক্ষত এখনও সেরে ওঠেনি। তবে যে ক্ষত আর কোনও দিন মিটবে না, তাঁর জন্য হাঁটতে হাঁটতে বার বার চোখ মুছলেন বিশ্বাস। যেন এখনও তাঁর বিশ্বাস হচ্ছে না যে, ভাই আর নেই! ছ’দিন আগে যাঁর সঙ্গে লন্ডনে যাওয়ার বিমান ধরেছিলেন, বসেছিলেন কয়েক হাত দূরত্বে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনের গ্যাটউইকগামী বিমান। ওড়ার এক মিনিটের মধ্যেই অহমদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়ে সেটি। বিমানে সওয়ার ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনেরই মৃত্যু হয়। ওই এআই১৭১ বিমানটির ইকনমি ক্লাসের ১১এ আসনে বসেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রমেশ। আসনটি ছিল আপৎকালীন দরজার কাছেই। তাঁর ভাই অজয় বসেছিলেন ১১জে আসনে। দুটো আসনের ব্যবধান কয়েক হাত। একই বিমানযাত্রায় এক ভাই প্রাণে বাঁচলেও ঝলসে গিয়েছেন অন্য জন।
জানা গিয়েছে, ২০০৩ সাল থেকে সপরিবার ব্রিটেনে থাকেন রমেশরা। কিছু দিন আগে দিউতে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে ফিরছিলেন দুই ভাই। কিন্তু ফেরা হল না এক জনের।