প্রতীকী ছবি।
বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি-ঘাঁটির সংখ্যা এই প্রথম ‘প্রায় শূন্য’ বলে ঘোষণা করল বিএসএফ।
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল কে কে শর্মা রবিবার জানান, ‘‘দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের নিবিড় বোঝাপড়ার ফলেই এই সাফল্য মিলেছে। ভারতীয় জঙ্গিদের ঘাঁটির বিষয়ে এখন আমরা যখনই সুনির্দিষ্ট তথ্য দিচ্ছি, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে তা উচ্ছেদ করছে।’’ এই ‘বিরাট সাফল্যের’ জন্য বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-কে অভিনন্দন জানান বিএসএফের ডিজি।
শনিবারই মহা সমারোহে একাত্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘বিজয় দিবস’ পালন করেছে ভারত ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। তার পরের দিনেই বিএসএফের এই ঘোষণাকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্কের এক নতুন ক্রোশফলক বলা যেতে পারে।
প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের সঙ্গে যখনই বৈঠকে বসেছে, বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় জঙ্গিদের ঘাঁটির তালিকা তাদের দিয়েছে বিএসএফ। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামাতে ইসলামি সরকারের আমলে তালিকায় থাকা এই ঘাঁটির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছিল বলে বিএসএফের এক কর্তা জানিয়েছেন। কিন্তু খালেদা সরকার সেই তালিকা পেয়েই জানিয়ে দিত, ভারতের অভিযোগ অসত্য। বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় জঙ্গিদের কোনও ঘাঁটির অস্তিত্ব নেই।
বিএসএফের ডিজি জানান, এই সরকারের আমলে বিএসএফের তালিকাকে গুরুত্ব দিয়ে দিনের পর দিন অভিযান চালিয়ে ভারতীয় জঙ্গিদের ঘাঁটিগুলি নিশ্চিহ্ন করেছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী। ফলে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আর কোনও ঘাঁটি ‘প্রায় নেই বললেই চলে’। ফলে এই প্রথম বিজিবি-র সঙ্গে বৈঠকে এমন কোনও তালিকা দেওয়া হয়নি।
বিএসএফের আর এক কর্তা জানাচ্ছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দারবন ও খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরার এনএলএফটি, অসমের আলফা ও মণিপুরের কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন বেশ কয়েকটি ঘাঁটি চালাচ্ছিল বলে বিজিবি-কে জানানো হয়েছিল। আরও দু’টি জেলা, মৌলভিবাজার ও শেরপুরেও উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাচ্ছিল পরেশ বরুয়ার নেতৃত্বাধীন আলফা। বিএসএফের তথ্যের ভিত্তিতে সে সব ঘাঁটি উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশের সামান্তরক্ষী বাহিনী ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীগুলি। বিএসএফের ওই কর্তার কথায়— উত্তর-পূর্বের সন্ত্রাসবাদীরা এখন বুঝেছে, বাংলাদেশে ঘাঁটি তৈরি করার সুযোগ এখন আর নেই।
কিন্তু জঙ্গি-ঘাঁটির সংখ্যা কেন ‘প্রায় শূন্য’ বলছে বিএসএফ? সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি জানান, ঘাঁটি না-থাকলেও কিছু জঙ্গি এখনও বাংলাদেশ গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তবে সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা সকলে ধরা পড়লে তবেই এই সংখ্যাটা একেবারে শূন্য বলা যাবে— জানিয়েছেন ডিজি শর্মা।