পাম্পে নাই-নাই, পেট্রোল বিকোচ্ছে কালোবাজারে

ফেলো কড়ি, কেনো তেল! রাজ্যের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পে ঝুলছে ‘নো পেট্রোল’ কিংবা ‘পেট্রোল নাই’ বোর্ড। আর আড়ালে আবডালে সেই মহার্ঘ জ্বালানি বিকোচ্ছে দ্বিগুণ, কখনও তিনগুণ দামে। আগরতলা শহরেই রয়েছে ২০টিরও বেশি পেট্রোল পাম্প।

Advertisement

আশিস বসু

আগরতলা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৯
Share:

তেল বাড়ন্ত। সোমবার আগরতলায় বাপি রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।

ফেলো কড়ি, কেনো তেল!

Advertisement

রাজ্যের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পে ঝুলছে ‘নো পেট্রোল’ কিংবা ‘পেট্রোল নাই’ বোর্ড। আর আড়ালে আবডালে সেই মহার্ঘ জ্বালানি বিকোচ্ছে দ্বিগুণ, কখনও তিনগুণ দামে। আগরতলা শহরেই রয়েছে ২০টিরও বেশি পেট্রোল পাম্প। প্রায় সর্বত্রই একই ছবি। কয়েকটিতে অবশ্য শুরু হয়েছে ‘রেশনিং’। সেখানে দু’চাকা-চার চাকার দীর্ঘ সারি।

গত ১ অক্টোবর থেকে শিলচর-বদরপুর-আগরতলা রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্রডগেজ লাইন বসানোর লক্ষ্যে আগাম নোটিশ দিয়েই রেল মন্ত্রক আগামী ছ’মাসের জন্য পরিষেবা বন্ধ করেছে। ফলে রেলপথে তেল সরবরাহ বন্ধ। ভরসা সড়ক পথ। কিন্তু সেখানে কখনও অবরোধ চলছে, কখনও বা নামছে ধস।

Advertisement

কার্যত পঞ্চমীর দিন থেকেই প্রতিটি পাম্পে তেলের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়তে শুরু করে। সপ্তমীর সকাল থেকে অধিকাংশ পাম্পেই ‘পেট্রোল নাই’ বোর্ড ঝুলতে দেখা যায়। আজও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। তবে সংকট শুরু হতেই কালো বাজারে তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগও নেই বললেই চলে। প্রশ্ন করতেই দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের খাদ্য-সরবরাহ মন্ত্রী ভানুলাল সাহা বামপন্থী ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘দেশের ধনতান্ত্রিক আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামোয় এটাই স্বাভাবিক। সরবরাহ-জোগানের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাজ্য সরকারের কার্যত নেই।’’ নাসিকের পেয়াঁজ নিয়ে যখন দেশে ‘কালোবাজারি’ হল, তখন কেন্দ্রীয় সরকার বা মহারাষ্ট্র সরকার কী করতে পেরেছে---এ প্রশ্নও তুলেছেন ভানুবাবু। তাঁর বক্তব্য, সমস্ত রাজ্যের জন্য উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগরে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসি) একটিই তেলের ডিপো রয়েছে। সেখানে সমগ্র ত্রিপুরার জন্য তিন-চার দিনের পেট্রোল রিজার্ভ করা যায় বলে মন্ত্রী জানান। তাঁর মতে, এই ক্ষমতা যদি আইওসি না বাড়ায় তবে মাঝে মাঝেই রাজ্যবাসীর কপালে এমন দুর্ভোগ থাকবে।

আজও শহরের অধিকাংশ পাম্পে ঝুলছে ‘পেট্রোল নাই’ বোর্ড। দু’-একটি পাম্পে, যেখানে তেল রয়েছে সেখানে এখন রাজ্য সরকার ‘রেশনিং’ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী গাড়ি প্রতি এক থেকে ৫ লিটার তেল দেওয়া হচ্ছে। আরএমএস চৌমুহনি ও বিদুরকর্তা চৌমুহনীর মাঝে একটি পেট্রোল পাম্পে কাঠফাটা রোদ্দুরে তিন থেকে চারশো গাড়ি-মোটরবাইকের লাইন। এক মোটরবাইক-আরোহী, প্রশান্ত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘পাম্পের বাইরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পেট্রোল মিলছে। প্রতি লিটার কোথাও ১৩০-১৪০, কোথাও বা ২০০ টাকা।’’ তাঁর বক্তব্য, অত দামে কিনব না বলেই পাম্পে লাইনে দাঁড়িয়েছি। তবে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, পাম্পে যখন তেল নেই, তখন কালো বাজারে তেল যাচ্ছে কোথা থেকে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন