বিতর্ক চলবে দলে, বুঝিয়ে দিলেন ইয়েচুরি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কলকাতায় সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মানব বন্ধনের কর্মসূচি নিয়েছিলেন বাম নেতারা। দেশে সংহতি ও সম্প্রীতির পরম্পরা বজায় রাখার বার্তা দিতেই এমন কর্মসূচি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৭ ০৭:০০
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্যসভায় ফের তাঁর প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। কংগ্রেসের সমর্থন নেওয়ার প্রশ্নে তখন থেকেই নতুন করে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এমনকী, বাংলা সিপিএমের একাংশ প্রকাশ কারাটদের লাইন থেকে বেরিয়ে নতুন দল গড়ার সম্ভাবনা নিয়েও চর্চা করছেন। অন্তত আগামী বছর এপ্রিলে হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত এমন বিতর্ক যে দলে জারি থাকবে, কলকাতায় এসে তা বুঝিয়ে দিলেন স্বয়ং ইয়েচুরিই। কয়েক দিন আগে একই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তবে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে প্রত্যাশিত ভাবেই ইয়েচুরি দল ভাঙার সম্ভাবনা নাকচ করে দিতে চেয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: লালকেল্লার মঞ্চ থেকে সকলকে নিয়ে চলার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কলকাতায় সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মানব বন্ধনের কর্মসূচি নিয়েছিলেন বাম নেতারা। দেশে সংহতি ও সম্প্রীতির পরম্পরা বজায় রাখার বার্তা দিতেই এমন কর্মসূচি। কলকাতায় এসে মঙ্গলবার কংগ্রেস-প্রশ্নে দলের অন্দরের বিতর্ক নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ইয়েচুরিকে। তিনি বলেন, ‘‘বিতর্ক চলছে, সেটা ভাল। এটা একটা দলের সজীবতার লক্ষণ! তবে বেঙ্গল লাইন বলে আলাদা কিছু নেই। আমাদের দলে একটাই লাইন— কেন্দ্রীয় লাইন।’’ এই সূত্রেই তাঁর সংযোজন, ‘‘দল ভাগের কোনও সম্ভাবনা নেই। সব কিছু নিয়েই আমরা পার্টি কংগ্রেসে আলোচনা করব।’’ কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দলের মধ্যে নানা রকমের মূল্যায়ন যে আছে, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ দিন ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘শুধু কংগ্রেস নিয়ে কেন, বিভিন্ন দল ও পরিস্থিতি নিয়েই নানা মতামত আছে। শেষ পর্যন্ত পার্টি কংগ্রেসেই গোটা বিষয়ে আলোচনা হবে। দলের লাইন ঠিক হবে।’’

Advertisement

হায়দরাবাদের ওই পার্টি কংগ্রেসের আগে দলের মধ্যে বিতর্ক যে জোরদার হবে, তার ইঙ্গিত বাংলা থেকে মিলছে। কংগ্রেস স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে সমর্থন দিতে রাজি থাকলেও ইয়েচুরিকে কেন রাজ্যসভায় এ বার প্রার্থী করা হল না, সেই প্রশ্ন তুলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি পাঠিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি। তাদের বক্তব্য,
রাজ্যসভার ভোটের ১৫ দিন আগে রাষ্ট্রপতি ভোটে কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মীরা কুমারকে ভোট দেওয়া গেলে ইয়েচুরির ক্ষেত্রে সমর্থন নিতে
কী অসুবিধা ছিল, বোধগম্য হচ্ছে না! দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদককে কারাটকে রাজ্যে এসে কর্মী-সমর্থকদের কাছে ওই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে দাবি জেলা নেতৃত্বের!

যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম যখন এমন দাবি করছে, তাদের জেলা সম্পাদক গৌতম দেবের বিরুদ্ধে আবার কেন্দ্রীয় কমিটিকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে রেখেছে বর্ধমান জেলা সিপিএম! তাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে গৌতমবাবু প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলা ও নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? গৌতমবাবু কেন্দ্রীয় কমিটিরই সদস্য বলে আলিমুদ্দিন এ ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেনি। তবে পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটির আগামী বৈঠকে ফের এই বিতর্কের ঝাঁপি খুলতে পারে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন