cremation

Nirmala Sitharaman: শেষকৃত্যে কোনও জিএসটি নেই, লোকসভায় আশ্বাস অর্থমন্ত্রী নির্মলার

লোকসভায় বিরোধী দলের সাংসদেরা দুধ, লস্যি, মুড়ি, চাল, ডাল থেকে শ্মশানের চুল্লিতেও জিএসটি চাপানো হয়েছে বলে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩৮
Share:

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ফাইল চিত্র।

মূল্যবৃদ্ধির ঠেলায় আমজনতার নাভিশ্বাস উঠেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। লোকসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দিয়ে জানালেন, শ্মশানে বা কবরখানায় অন্তিম সংস্কারে কোনও জিএসটি নেই।

Advertisement

মূল্যবৃদ্ধি ও খাদ্যপণ্যে জিএসটি নিয়ে সংসদের অধিবেশন দু’সপ্তাহ অচল ছিল। মোদী সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা এড়াতে যুক্তি দিয়েছিল, অর্থমন্ত্রী কোভিড আক্রান্ত। সীতারামন সুস্থ হয়ে ফিরে আসায় সরকার অবশেষে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়েছে। আজ লোকসভায় বিরোধী দলের সাংসদেরা দুধ, লস্যি, মুড়ি, চাল, ডাল থেকে শ্মশানের চুল্লিতেও জিএসটি চাপানো হয়েছে বলে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। জবাবে নির্মলা বলেছেন, ‘‘শ্মশানে দাহ বা গোরস্থানে কবর দেওয়ার পরিষেবায় কোনও জিএসটি নেই। এই সব পরিষেবা সম্পূর্ণ জিএসটি মুক্ত। তবে শ্মশানের চুল্লি তৈরির কাজে নির্দিষ্ট হারে জিএসটি বসবে।’’

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করে বিরোধীদের প্রধান অভিযোগ ছিল, জিনিসপত্রের চড়া দাম সত্ত্বেও মোদী সরকার পেট্রল-ডিজ়েলে শুল্ক কমাচ্ছে না। খাদ্যপণ্যে জিএসটি চাপাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী নিজের পিঠ চাপড়ে বলেছেন, কোভিড অতিমারি, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ, ওমিক্রন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চিনের লকডাউন সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার মূল্যবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তার স্বীকৃতি দিতে হবে। অর্থনীতিতে মন্দা বা মূল্যবৃদ্ধি-বেকারত্বের যোগফল ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর আশঙ্কা রয়েছে বলেও মানতে চাননি সীতারামন। তাঁর দাবি, প্যাকেটবন্দি খাদ্যেই জিএসটি চাপানো হয়েছে। সব রাজ্য তাতে সায় দিয়েছে। আর জ্বালানি থেকে আদায় করা শুল্ক উন্নয়নের কাজেই খরচ হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর মুখে নিজেরই প্রশস্তি শুনে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা তাঁর জবাবি বক্তৃতার মধ্যেই ওয়াক-আউট করেছেন। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির কটাক্ষ, অর্থমন্ত্রীর কথার নির্যাস হল, ‘অল ইজ় ওয়েল’, কোথাও কোনও সমস্যা নেই। এ যেন সেই অবিস্মরণীয় ‘রুটি কিনতে না পারলে কেক কিনে খাও’ মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি। সীতারামন এ সবে কান না দিয়ে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করে দেখিয়েছেন, ভারতের অর্থনীতির অবস্থা যথেষ্ট ভাল। চিনের ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্যের সঙ্গে এ দেশের ব্যাঙ্কের তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, দু’সপ্তাহ ধরে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে হইচই করার পরে কংগ্রেসই সংসদ থেকে পালিয়ে গিয়েছে।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ব্যর্থতা ঢাকতে অর্থমন্ত্রী রাজনীতি করেছেন। অর্থমন্ত্রী বক্তৃতার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কিছুটা রাজনৈতিক বক্তৃতাই করবেন। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই সংসদে আলোচনা হয়েছে। একা অর্থমন্ত্রী নন। বিজেপি সাংসদরাও আজ সংসদে আলোচনায় দাবি করেছেন, কোথাও কোনও সমস্যা নেই। বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত সিন্‌হার দাবি, দেশে মূল্যবৃদ্ধি বলে কিছুই নেই। আর এক বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের দাবি, কোভিডের সময় গরিবদের অন্নের সংস্থান করা হয়েছে। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা প্রাপ্য। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় নির্মলা ‘মোদী সরকার অম্বানী-আদানির জন্য কাজ করে’ অভিযোগেরও জবাব দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, রাজস্থানের কংগ্রেস সরকার, তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকারও আদানি গোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বরাত দিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কটাক্ষ, ‘‘অর্থমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেওয়া দরকার ছিল, এ দিন লোকসভায় আলোচনার বিষয় ছিল মূল্যবৃদ্ধি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন