National News

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে ঝাঁসির ‘মাদার কপ’ অর্চনার এই ছবি

একটু বিশদে বলা যাক। ছবিটিতে উর্দি পরা ওই মহিলা আসলে ঝাঁসির কোতয়ালি থানার এক অফিসার। নাম অর্চনা জয়ন্ত। পুরো উত্তরপ্রদেশ তাঁকে এখন ‘মাদার কপ’ নামেই চেনে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:০০
Share:

অর্চনা জয়ন্ত। ঝাঁসির এই পুলিশকর্মীর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

পুলিশের উর্দি পরা এক মহিলা চেয়ারে বসে একটি খাতার উপর কিছু লিখছেন। তাঁর ঠিক সামনেই রয়েছে উঁচু একটা টেবিল। আর সেই টেবিলের মধ্যেই শোয়ানো রয়েছে একটি শিশু। যেখানে বাচ্চাটিকে শোয়ানো রয়েছে টেবিলের সেই অংশটা সামনের দিক থেকে আটকানো। ফলে সামনে থেকে কারও বোঝাই সম্ভব নয় যে ওখানে একটি শিশু রয়েছে। এমনই একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ছবিটিকে ঘিরে প্রশংসা উপচে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। না, ফোটোগ্রাফির জন্য নয় কিন্তু, ছবির মধ্যে যে বাস্তবটা ধরা পড়েছে সেটাই বহুল আলোচিত হচ্ছে।

Advertisement

একটু বিশদে বলা যাক। ছবিটিতে উর্দি পরা ওই মহিলা আসলে ঝাঁসির কোতয়ালি থানার এক কনস্টেবল। নাম অর্চনা জয়ন্ত। পুরো উত্তরপ্রদেশ তাঁকে এখন ‘মাদার কপ’ নামেই চেনে। শুধু উত্তরপ্রদেশই বা কেন, গোটা দেশে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তিনি। সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া।

আগরার বাসিন্দা অর্চনা। কর্মসূত্রে তিনি এখন ঝাঁসিতে। স্বামী ও পরিবার রয়েছে আগরাতেই। অর্চনার মাস ছয়েকের কন্যাসন্তান রয়েছে। নাম অনিকা। তাঁকে নিয়েই ঝাঁসিতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। পরিবার-পরিজন কাছে না থাকায় সন্তানকে দেখভালের বিষয়টি পুরোপুরি তাঁর উপরই। শুধু সন্তানকে দেখাশোনাতেই সময় কাটালে তো হবে না! চাকরিও তো আছে। তা-ও আবার পুলিশের মতো টাইট সিডিউলের একটি কাজ। ফলে দুটো সামলানো অর্চনার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথায় আছে, যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। অর্চনার ক্ষেত্রেও বিষয়টা সে রকমই। তিনি এক দিকে থানার কাজও সামলান, আবার সমান তালে মাতৃত্বের দিকটাও খেয়াল রাখেন। এই দুটো কর্তব্যের কোনওটাতেই যাতে এক চুলও খামতি না হয় সেটাও খেয়াল রাখেন একই সঙ্গে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সাধারণ থাকাই ভাল, উপলব্ধি সে দিনের ‘বিস্ময় বালিকা’ মৌসুমির

দুটো কাজ কী করে সামলান তিনি?

এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্চনা বলেন, “সমস্যা তো হয়ই। কিন্তু আমার কাছে দু’টোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের দেখাশোনাও করি।” তাই তিনি যখন কাজে আসেন সঙ্গে নিয়ে আসেন অনিকাকেও। যাতে অনিকার দেখভাল এবং থানার কাজকর্ম একই সঙ্গে সামলানো যায়।

সবসময় তো থানায় থাকা সম্ভব হয় না, তা হলে? অর্চনা হেসে জানান, এ কাজে তো বাইরে যেতেই হয়। কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায় ফিরে আসতে। তখন অনিকাকে সামাল দেন তাঁরই সহকর্মীরা। তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় ইমারজেন্সিতে ডাকা হয়। তখন উপায় থাকে না। অনিকাকে সঙ্গে নিয়েই থানায় চলে আসি। ওখানেই ওকে ঘুম পাড়ানো, খাওয়ানো সব কিছুই করাতে হয়।” তার এই চ্যালেঞ্জিং কাজই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসার ঝড় তুলেছে।

আরও পড়ুন: জরা-বার্ধক্য হয়ে যাবে অতীত? ২০৪৫-এর মধ্যেই মানুষের ইচ্ছামৃত্যু?

অর্চনা জানান, তিনি ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছেন। আগরাতে ট্রান্সফার চেয়ে আবেদন করেছেন। ওখানে গেলে অনিকাকে তাঁর পরিবার দেখাশোনা করতে পারবে। আর তাঁর পক্ষেও ভাল ভাবে কাজ করা সম্ভব হবে।

অর্চনার এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারাও তাঁর প্রশংসা করেছেন। ডিআইজি সুভাষ সিংহ বাঘেল অর্চনাকে পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণাও করেছেন। তিনি বলেন, “যে ভাবে অর্চনা দুটো দায়িত্বই নিখুঁত ভাবে সামলাচ্ছেন, সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।”

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন