প্রতিবাদ: এফআরডিআই বিলের বিরুদ্ধে সংসদে গাঁধী-মূর্তির সামনে ধর্না তৃণমূলের। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
আর্থিক ক্ষেত্রের বিতর্কিত খসড়া বিলটির বিরোধিতা করে আগেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে তিনি নির্দেশ দেন, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই ‘ফিনানন্সিয়াল রেজলিউশন অ্যান্ড ডিপোজিট ইনশিওরেন্স (এফআরডিআই)’ বিলটিকে আটকানোর জন্য বিরোধিতা করতে হবে। আজ গুজরাত নির্বাচনের ফল বেরনোর পরের দিন সংসদের ভিতরে ও বাইরে এই খসড়া বিলের প্রতিবাদে মুখর হল তৃণমূল।
সকালে সংসদ শুরু হওয়ার আগে গাঁধী মূর্তির সামনে তৃণমূলের ৩৬ জন সাংসদ ধর্নায় সামিল হন ওই ব্যাঙ্কিং বিলের বিরুদ্ধে। দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিলটি নিয়ে দলনেত্রী উদ্বিগ্ন। কোর কমিটিতেই আমাদের তা জানিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) এই বিলের খসড়া নিয়ে কী অভিমত দেবে, সেটা বড় কথা নয়। আমরা চাই বিলটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক।’’
রাজ্যসভায় ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে বিলটির বিরোধিতা করে তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এর পরই লোকসভা থেকে রাজ্যসভায় বার্তা আসে, বিজেপির ভূপেন্দ্র যাদবের নেতৃত্বাধীন জেপিসি আরও সময় চেয়েছে বিলটি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। এবং এই সময়সীমাকে বাড়িয়ে বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত টানা হয়েছে। শীত অধিবেশনেই বিলটি পাশ করানোর কথা ভাবছিল সরকার। জেপিসিতে বিরোধিতার জেরে ও মানুষের মধ্যে ভুল সংকেত যাওয়ার আশঙ্কায় এটিকে আপাতত হিমঘরে পাঠানোর কথা ভাবছে কেন্দ্র। তৃণমূল সূত্রের দাবি, খোদ বিজেপির অনেক সাংসদও গোপনে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাঁরা নাকি জানাচ্ছেন, বিজেপিতেই অনেকের অসন্তোষ রয়েছে বিষয়টি নিয়ে।
চলতি অধিবেশনে মমতার কৌশল হল, বিষয় ধরে ধরে সংসদীয় বিতর্কের মাধ্যমে মোদী সরকারের বিরোধিতা করা। কংগ্রেস সংসদ অচল করার সিদ্ধান্ত নিলে তৃণমূল সে ক্ষেত্রে পাশে থাকবে না। সুদীপের কথায়, ‘‘জিএসটি, নোট বাতিল, আধার-সংযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আমরা লোকসভায় দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।’’
তৃণমূলের এ দিনের ধর্না নিয়ে অবশ্য তির্যক মন্তব্য করতে ছাড়েননি বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা রাজ্যে কুকর্ম করে যে বিপর্যয় ডেকে এনেছেন। সেখান থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে এখন কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন করছেন। বিজেপির গুজরাত জয়ের পরে সেটাকে খাটো করে দেখাচ্ছেন। এ সব নিজের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টা মাত্র।’’