— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
১০টি নিমের চারা লাগিয়ে যত্ন বড় করে দেখাতে হবে! যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে এমনই অভিনব শর্তে মুক্তি দিল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। সম্প্রতি এক খুনের আসামির মুক্তির আবেদন শুনে বিচারপতি আনন্দ পাঠক এবং বিচারপতি পুষ্পেন্দ্র যাদবের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের যুক্তি, হিংসাত্মক আচরণের পরিবর্তে মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটবে এতে।
বছর দশেক আগে একটি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন মহেশ শর্মা নামে ওই যুবক। সেই থেকে এত দিন জেলেই কাটিয়েছেন মহেশ। ২০২১ সালে নিম্ন আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহেশ। পাশাপাশি, যে কোনও শর্তে মুক্তির আর্জিও জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মামলার শুনানিতেই এমন নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে শর্ত একটাই! মুক্তি পেয়েই ১০টি নিম অথবা পিপলের চারা লাগাতে হবে তাঁকে। তার পর সেগুলিকে যত্নে বড় করতে হবে। ৩০ দিন পর চারাগাছগুলির ছবিও পাঠাতে হবে আদালতকে।
আদালতের যুক্তি, ইতিমধ্যে এক দশকেরও বেশি সময় কারাগারে কাটিয়ে ফেলেছেন ওই আসামি। তাই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এ ভাবে সৃষ্টি এবং প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার মাধ্যমে হিংসা-হানাহানির বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘বর্তমানে, মানব অস্তিত্বের অপরিহার্য উপাদান হিসাবে করুণা, সেবা, ভালবাসা ও দয়ার মতো গুণাবলি গড়ে তোলা প্রয়োজন, কারণ এগুলি মৌলিক মানবিক প্রবৃত্তি। তাই এই গুণগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এই প্রচেষ্টা কেবল একটি গাছ লাগানোর জন্য নয়, বরং একটি ধারণার বীজ বপনের জন্য।’’
আদালতের নির্দেশ, তিন-চার ফুট গভীর গর্তে ছয় থেকে আট ফুট উচ্চতার চারাগাছগুলি রোপণ করতে হবে ওই আসামিকে, যাতে চারাগুলি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ গাছে পরিণত হয়। এ বিষয়ে কোনও রকম অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না। নির্দেশ না মানলে এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করবে বলেও জানিয়েছে আদালত।