প্রতীকী ছবি।
গুজরাত নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরেই, ত্রিপুরা জয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে বিজেপি। ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১৮-র ৬ মার্চ, নাগাল্যান্ডে ১৩ মার্চ। তার আগে ফেব্রুয়ারি নাগাদ তিন রাজ্যে একসঙ্গে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। ত্রিপুরায় মানিক সরকারের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের বাকি দুই রাজ্যেও রাজ্যেও ক্ষমতা দখল করে হ্যাটট্রিক করার পরিকল্পনা বিজেপি নেতৃত্বের। ত্রিপুরায় তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি হাতিয়ার করতে চান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও।
এক দফা দশরথ দেব, তার পরে চার দফায় মানিক সরকার— ১৯৯৩-এর এপ্রিল থেকে টানা বাম শাসন চলছে ত্রিপুরায়। পালাবদলের লক্ষ্যে একটা সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুকুল রায়কে। মুকুলের তৎপরতায় প্রাক্তন মন্ত্রী সমীর বর্মনের পুত্র সুদীপ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে আসেন।
এখন মুকুলের মতোই সুদীপও বিজেপিতে। বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার দায়িত্বে রয়েছেন আরএসএস নেতা সুনীল দেওধর। গত চার বছর ধরেই ত্রিপুরার দায়িত্বে রয়েছেন এই মরাঠি নেতা। তাঁর দাবি, ‘‘গোটা রাজ্যে সিপিএমের বিকল্প হিসেবে কংগ্রেস নিজের প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। তাই ওই রাজ্যে সিপিএমের বিরুদ্ধে মূল লড়াইটি হবে বিজেপির।’’
দেওধরদের রণকৌশল হল, যোগী আদিত্যনাথকে মাঠে নামানো। ত্রিপুরায় জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ হল নাথ ও দেবনাথ সম্প্রদায়। যারা ওবিসি। আদিত্যনাথও এই সম্প্রদায়ের। দেওধরের পরিকল্পনা হল, যোগীকে দিয়ে উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত মানিক সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে নাথ সম্প্রদায়ের ভোটকে বিজেপির ঝুলিতে টেনে আনা। যোগীর প্রচারের পরে সবশেষে জানুয়ারিতে আসরে নামবেন খোদ মোদী।
দেওধর অবশ্য প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ত্রিপুরায় বাম জমানার অবসান ঘটাতে লড়াইটাকে শুধু সেই রাজ্যের গণ্ডিতেই বেঁধে রাখেননি। ত্রিপুরার অনেক তরুণ-তরুণী বেঙ্গালুরুতে পড়াশোনা করেন, কাজ করেন সেখানকার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে। তাঁদের নিয়ে সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে একটি সম্মেলন করেছেন দেওধর। সেখানে হাজির ছিলেন কর্নাটকের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার। আজ তিনি আগরতলা যাওয়ার আগে দেখা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে। রাজনাথের কাছে ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
দেওধর পরে বলেন, ‘‘সীমান্তে চোরাচালান পুরো মাত্রায় চালু রয়েছে। কাশির ওষুধ থেকে শুরু করে গরু পাচার— সব কিছুই অবাধে চলছে। সীমান্ত পেরিয়ে অবাধে মাদক দ্রব্য আনা-নেওয়া হচ্ছে। সরকার দেখেও দেখছে না। মানিক সরকারের দলের বিরুদ্ধে নানা সময়ে একাধিক চিটফান্ড দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মানুষ তাই পরিবর্তন চান।’’