কোথাও লাইন বসে গিয়েছে। কোথাও বা রেলপাতের সংযোগস্থলে বেড়ে গিয়েছে ফাঁক। কোথাও আবার সেতুর কোনও অংশের হাল খারাপ। ট্রেন চলতে থাকা অবস্থাতেই এ বার জানা যাবে রেলের যাত্রাপথের হালহকিকত। এবং তা জানান দেবে কামরায় লাগানো বিশেষ প্রযুক্তি।
এখানেই শেষ নয়। কোনও ট্রেনের যাত্রা শুরুর আগে এই বিশেষ প্রযুক্তির যন্ত্রের সাহায্যেই জেনে নেওয়া যাবে, কোন কোচে দুলুনি কতটা হচ্ছে, চাকার ঘূর্ণন কেমন, বেয়ারিংয়ের শব্দ কতটা তীব্র, কামরার আলো, বাতানুকূল ব্যবস্থা, এমনকি শৌচাগারে পর্যাপ্ত জল আছে কি না। প্রয়োজনে যাত্রাপথের বিভিন্ন জায়গায় কামরার স্বাস্থ্য জানতেও ব্যবহার করা হবে এই যন্ত্র। রেল বোর্ড সূত্রের খবর, বিশেষ প্রযুক্তির এই যন্ত্র ত্রুটি খুঁজে পেলেই কোথায় মেরামতির প্রয়োজন, তা-ও জানিয়ে দেবে। যন্ত্রে রেকর্ড হয়ে থাকা তথ্য তদন্তের কাজেও ব্যবহার করা যাবে। এই বিশেষ যন্ত্র লাগানো কোচ তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে রায়বেরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি। পরীক্ষামূলক ভাবে এই যন্ত্র লাগানো একটি কোচ তৈরি করেছে তারা। পরীক্ষায় পাশ করলে বাণিজ্যিক হারে এই কোচ তৈরি করা হবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই প্রযুক্তিতে বহুমুখী ব্যবস্থার মাধ্যমে কোচ এবং রেলপথের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য একটি মনিটরে দেখার সুযোগ থাকবে। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে আগাম রক্ষণাবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন রেলকর্মীরা। এতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজটাও আরও ভাল হবে বলে আশা করছেন রেলকর্তারা। এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘ট্রেন বেলাইন হওয়া বা অন্য যে-সব সম্ভাব্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, আমরা ওই যন্ত্র ব্যবহার করে সেগুলো কমানোর চেষ্টা করছি।’’
প্রতিটি কোচে নতুন যান্ত্রিক ব্যবস্থা রাখার জন্য ২০-২৫ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ হতে পারে। রেলের এক কর্তা জানান, রেলের গবেষণা সংস্থা রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন বা আরডিএসও-র অধীনে একাধিক সরকারি-বেসরকারি সংস্থা দুর্ঘটনার আগাম সতর্কীকরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। ওই সব যন্ত্রাংশ বাজারে এলে কোচ বা ইঞ্জিনে প্রয়োজন অনুযায়ী তা ব্যবহার করা যাবে। নতুন এই প্রযুক্তি সেই গবেষণারই অঙ্গ।