বিধানসভা ভোটে এ পার্টির কোনও ভবিষ্যতই নেই। সুতরাং মাটি কামড়ে পড়ে থেকে কী লাভ? কার্যত এই চিন্তা থেকেই ঝাড়খণ্ডের তৃণমূল বিধায়ক চামরা লিন্ডা দল ছেড়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চায় (জেএমএম) যোগ দিতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
লিন্ডার ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, লোকসভা ভোটে জামানত জব্দ হওয়া ‘বাংলা পার্টি’-র ভবিষ্যত যে এখানে একেবারে ঝরঝরে তা বুঝেই সময় থাকতে চামরা জেএমএমে গিয়ে বিষুণপুরের টিকিট নিশ্চত করতে চাইছেন। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে লোহারডাগা থেকে তৃণমূলের প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বিজেপির সুদর্শন ভগতের কাছে একেবারে পর্যুদস্ত হন তিনি। জেএমএম মহাসচিব সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, “এ রাজ্যে ভোটে জেতার জন্য ঘাসফুল নয়, তির-ধনুকের প্রয়োজন। চামরা লিন্ডা সেটা সম্ভবত বুঝতে পেরেছেন। তাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” তবে লিন্ডা আপাতত অধরা। ফোনও বন্ধ।
অবশ্য চামরা লিন্ডার জেএমএমে যোগ দেওয়ার কথা তিনি জানেন না বলেই দাবি দলের সভাপতি বন্ধু তিরকের। বন্ধুর অভিযোগ, “একজন বিধায়কের যা কাজ, তার কিছুই করেননি চামরা। বিধানসভা থেকে শুধু বেতন নিয়েছেন। মানুষের সমস্যার কথাও কিছু বলেননি কোনও দিন।” অতএব বন্ধুর দাবি, এ সব লোক দল ছাড়লে কোনও ক্ষতি নেই। উল্লেখ্য, কংগ্রেসের সঙ্গে মনোমালিন্যে দল ছেড়ে পলামুর বিশ্রামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক চন্দ্রশেখর (দদাই) দুবেও তৃণমূলে যোগ দেন। ধানবাদ থেকে লোকসভা নির্বাচনেও লড়েছিলেন। কিন্তু সেখানে বিজেপি প্রার্থী পি এন সিংহের সামনে দদাই হেরে যান। তারপরেই তৃণমূল ছাড়েন দদাই।
রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই সব ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। বরং তাঁরা চাইছেন বড় ‘খুঁটি’ ধরতে। দলীয় সূত্রে খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডির দল ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চায় (জেভিএম) ভাঙন শুরু হওয়ার পরেই তাঁকে পাশে পাওয়ার জন্য নতুন করে চেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জেভিএমের এগারো জন বিধায়কের মধ্যে আট জন বিধায়ক দল ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতা মুকুল রায় কলকাতা থেকে আবারও বাবুলালের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “বিধায়করা দল ছাড়লেও এখনও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বাবুলালের অনুগামীর অভাব ঝাড়খণ্ডে নেই। তাঁকে পাশে পেলে তৃণমূল অন্তত জাতে উঠবে।”