তৃণমূল-রাঙ্খলে ‘না’, প্রার্থী তৈরি কংগ্রেসের

ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন আটকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রস্তাব ছিল তৃণমূলের।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৩
Share:

রাহুল গাঁধী।

বাংলার জন্য ‘একলা চলো’ নীতি নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার জন্য সেই নীতিই নিলেন রাহুল গাঁধী!

Advertisement

ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন আটকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রস্তাব ছিল তৃণমূলের। রাজ্যের মোট ৬০টি আসনের মধ্যে অর্ধেক কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়ে বাকি আসন আইএনপিটি-সহ উপজাতি সংগঠনগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব ছিল তাদের। কিন্তু শুক্রবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের উপস্থিতিতে এআইসিসি-র কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি ঠিক করেছে, মানিক সরকারের রাজ্যে তারা একাই লড়বে। প্রার্থী দেওয়া হবে ৬০টি আসনেই। সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার প্রথম দফায় কংগ্রেস ৫৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল।

কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই পাল্টা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল ও বিজয় রাঙ্খলের নেতৃত্বাধীন আইএনপিটি। তৃণমূলের তরফে ত্রিপুরায় দলের পর্যবেক্ষক সব্যসাচী দত্ত জানান, প্রথম দফায় তাঁরা ৩০টি আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ১৪ টি আসনে তৃণমূল প্রার্থী রয়েছে। বাকি ১৬টি আসনে আইএনপিটি ও অপর উপজাতি দল এনসিটি প্রার্থী দেবে। সম্ভবত, আইএনপিটি ১৩টি আসনে ও এনসিটি ৩টি আসনে প্রার্থী দেবেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। বাকি ৩০টি আসনের জন্য তৃণমূল অপেক্ষা করবে। যদি কোনও কারণে কংগ্রেস তাঁদের সঙ্গে জোটে সম্মত হয় তবে ওই আসনগুলি তাদের ছাড়া হবে বলে সব্যসাচীবাবু জানান।

Advertisement

প্রথমে তৃণমূল এবং পরে বিজেপি-র ধাক্কায় রাজ্যে সংগঠন ভেঙে গেলেও লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের জনসমর্থন যাচাই করে নেওয়ার উপরেই জোর দিচ্ছেন রাহুল। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের যুক্তি, লোকসভা ভোটের আগে দেশের রাজনীতির সমীকরণে অনেক বদল আসতে পারে। তার আগে ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে কংগ্রেসের বিরাট কিছু করার কোনও সম্ভাবনা নেই, সেখানে কোনও দলের সঙ্গে জোটের দৃষ্টান্ত খাড়া করার দরকার নেই। তা ছাড়া, ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির যুক্তি, তৃণমূলই প্রথমে ওই রাজ্যে কংগ্রেস ভাঙিয়েছে। এখন আবার তাদের সঙ্গে জোট কেন? শুক্রবার রাতে দিল্লিতে রাহুলের বাড়িতে নির্বাচন কমিটির সঙ্গে মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে ত্রিপুরার জন্য এআইসিসি-র স্ক্রিনিং কমিটি এই সব যুক্তি নিয়েই আলোচনা চালিয়েছে।

কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘মূল লক্ষ্য এখন বিজেপি-কে ঠেকানো। ত্রিপুরায় সেই কাজ করতে পারবেন মানিক সরকারই। আমাদের কাজ হবে এই ভোটে নিজেদের শক্তি মেপে নেওয়া। একই সঙ্গে উপজাতিদের মধ্যে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা কতখানি তাও খতিয়ে দেখা হবে এই ভোটে।’’

এ দিকে, শনিবার সন্ধ্যায় বিজেপি দিল্লিতে তাদের প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। ৬০টি আসনের মধ্যে ৯টি আসন তারা আগেই সহযোগী উপজাতি দল, আইপিএফটিকে ছেড়েছে। বাকি ৫১ আসনের মধ্যে ৪৪টিতে আজ প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে। তালিকায় বিজেপিতে যোগ দেওয়া সাত দলছুট কংগ্রেসি বিধায়কও রয়েছেন। রয়েছেন দুই প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কও। বিজেপি জানিয়েছে, ৬০ শতাংশ আসনে নতুন ও তরুণ মুখ আনা হয়েছে। বাকি সাতটি আসনের প্রার্থী রবিবার ঘোষণা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন