জিতে এলে মানিকের সঙ্গী চায় পলিটব্যুরো

বিজেপির আগ্রাসন ঠেকিয়ে মানিক সরকারই এ বার বিধানসভা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলে ত্রিপুরার জন্য সিপিএমে বাড়তি ‘মর্যাদা’র দাবি উঠছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

মানিক সরকার।

টানা ২৫ বছর সরকার চলছেই। তার উপরে এ বার নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের উদ্যত থাবার সামনে সেই সরকারকে রক্ষা করতে হবে!

Advertisement

বিজেপি-র আগ্রাসন ঠেকিয়ে মানিক সরকারই এ বার বিধানসভা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসলে ত্রিপুরার জন্য সিপিএমে বাড়তি ‘মর্যাদা’র দাবি উঠছে। গোটা দেশে বাম-শাসিত রাজ্য এখন মাত্র দু’টো। কেরল থেকে সিপিএমের পলিটব্যুরোয় যেখানে তিন জন সদস্য, ছোট্ট ত্রিপুরা থেকে দীর্ঘ দিন ধরেই সবেধন নীলমণি মানিকবাবু স্বয়ং। টানা ষষ্ঠ বারের জন্য ত্রিপুরায় বাম সরকার গড়তে পারলে দলের রাজ্য সম্পাদককেও পলিটব্যুরোয় জায়গা দেওয়ার কথা ভাবতে হচ্ছে সীতারাম ইয়েচুরিদের।

মোদী-শাহদের মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক শক্তির জোট গড়ার জন্য উন্নয়নের যে বিকল্প মডেলকে সামনে রাখতে চাইছেন ইয়েচুরি-প্রকাশ কারাটেরা, সেই ভাবনায় ত্রিপুরার সরকার অন্যতম জরুরি অংশ। খোদ শাহ রবিবারই উদয়পুর এবং আম্বাসায় জোড়া সমাবেশ করে হুঙ্কার দিয়েছেন, ‘‘ত্রিপুরার মানুষ পরিবর্তনের জন্য মরিয়া। তাঁদের উন্নয়ন দিতে পারে একমাত্র বিজেপি-র সরকার।’’ এর পরে যাবেন মোদী। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরার বিধানসভা ভোট বামেদের কাছে মর্যাদার লড়াই। সেই লড়াইয়ে সফল হলে আগামী এপ্রিলে হায়দরাবাদের পার্টি কংগ্রেসে পলিটব্যুরোয় আরও একটি জায়গা ত্রিপুরার প্রাপ্য বলেই মনে করছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ।

Advertisement

সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা, দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণও এখানে কার্যকর। বিরাট অঘটন না ঘটলে হায়দরাবাদে ফের দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কথা ইয়েচুরিরই। প্রথম বার দলের দায়িত্ব নেওয়ার পরে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাঁর শিবির ছিল সংখ্যালঘু। এ বার নিশ্চিত ভাবেই ইয়েচুরি তাঁর মতো করে ঘুঁটি সাজাবেন। তাঁর জমানায় ত্রিপুরা থেকে দ্বিতীয় কেউ পলিটব্যুরোয় গেলে সাধারণ সম্পাদকের শিবির ভারী হওয়ারই সম্ভাবনা! দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘কিছু অদলবদল তো হবেই। দেখা যাক, ভোটের ফলও বেরোক!’’

সিপিএমের রাজনীতিতে দুই বড় রাজ্য বাংলা ও কেরলের দুই রাজ্য সম্পাদক পলিটব্যুরোর সদস্য। কিন্তু ত্রিপুরায় দলের সরকার থাকলেও রাজ্য সম্পাদক পলিটব্যুরোয় নেই। তামিলনাড়ু থেকে এখন রাজ্য সম্পাদক জি রামকৃষ্ণন এবং এ কে পদ্মনাভন (একেপি)— দু’জন আছেন। একেপি জায়গা পেয়েছিলেন সিটুর সভাপতি হিসাবে। এ বার তাঁর জায়গায় সিটুর প্রথম মহিলা সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা এবং সাধারণ সম্পাদক তপন সেন দু’জনেই পলিটব্যুরোর দাবিদার। এঁদের মধ্যে এক জনকে নিয়ে ত্রিপুরা থেকে আরও এক জনকে কার জায়গায় নেওয়া যায়, তা নিয়েই অঙ্ক কষতে হচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্বকে।

বিধানসভা ভোটের জন্যই ত্রিপুরায় সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন পিছিয়ে মার্চ-এপ্রিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত, অন্য কোথাও হিসেব গোলমাল না হলে মানিক-ঘনিষ্ঠ কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য নতুন রাজ্য সম্পাদক হতে পারেন। সবই এখন অঙ্কে ঝুলছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন