আন্দোলনে ভোগান্তি যাত্রীদের

অসমের চৌতারা স্টেশনে ‘রেল রোকো’ আন্দোলনে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের রেল যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল৷ যার জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়লেন অসংখ্য ট্রেন যাত্রী৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০২:২২
Share:

দুর্ভোগ: ‘রেল রোকো’-র জেরে যাত্রীদের ভোগান্তি । নিজস্ব চিত্র

অসমের চৌতারা স্টেশনে ‘রেল রোকো’ আন্দোলনে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের রেল যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল৷ যার জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়লেন অসংখ্য ট্রেন যাত্রী৷ অসম ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকল একাধিক ট্রেন৷ দুপুরের লাঠি চার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পুলিশ অবরোধকারীদের হটিয়ে দিলে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷

Advertisement

কোচ রাজবংশীদের জনজাতি মর্যাদার (স্ট্যাটাস) দাবিতে সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অসমের চৌতারা স্টেশনে রেল রোকো আন্দোলনের ডাক দেয় অল অসম কোচ রাজবংশী সম্মেলনী। সকাল ছ’টা থেকে ওই স্টেশনে শুরু হয় রেল রোকো৷ যার ফলে নিম্ন অসম ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু দূরপাল্লার ট্রেন।

রেলের আধিকারিকরা জানান এদিন আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের বিভিন্ন স্টেশনে অসমগামী আপ গরিব রথ এক্সপ্রেস, আপ কামরূপ এক্সপ্রেস, আপ যশবন্তপুর কামাখ্যা এক্সপ্রেস বিভিন্ন স্টেশনে দাড়িয়ে ছিল। তা ছাড়া, বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস ও রাজধানী এক্সপ্রেসকে ফকিরাগ্রাম স্টেশন থেকে অন্য রুটে ঘুরিয়ে চালানো হয়। আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে অসমগামী কামাখ্যা ইন্টারসিটি ও রঙিয়া এনজেপি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়।

Advertisement

এ দিন নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে সকাল দশটা থেকে দাড়িয়ে ছিল আপ যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনের যাত্রী কিরনবাস রেড্ডি জানান, তিনি ওড়িশা থেকে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন। কিন্তু অসমে রেল রোকোর জেরে নিউ জলপাইগুড়ির পর থেকে ট্রেনটি বিভিন্ন স্টেশনে বারবার দাঁড়িয়ে পড়ছে। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী পার্বতী তামাং জানান, কামরূপ এক্সপ্রেসে তাঁর বঙ্গাইগাঁও যাওয়ার কথা। কিন্তু রেল রোকোর জেরে তাকে দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের জন্য স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়৷ জল্পেশ মন্দিরে পুজো দিয়ে অসমে বঙ্গাইগাঁও বাড়ি ফিরছিল রাহুল তরফতার, ধনেশ্বার বসুমাতারিরা। তাঁদেরও দীর্ঘ ক্ষণ নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসে থাকতে দেখা যায়।

অল অসম কোচ রাজবংশী সম্মেলনীর সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ কুমার রায় জানান, “রাজবংশীদের জনজাতিকরণের দাবিতে রেল কর্তাদের আগাম জানিয়েই এ দিন আমরা আন্দোলন করেছি৷”

এ দিন ভোর ছ’টা থেকেই সংগঠনের কয়েক হাজার সমর্থক চৌতারা স্টেশনে রেল রোকো আন্দোলনে সামিল হয়৷ প্রশাসনের তরফে বারবার অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করার পরও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ৷ অবরোধ তুলতে এরপর দুপুর একটা নাগাদ পুলিশ লাঠি চার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় বলে রেল সূত্রের খবর৷ তারপরই ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷ যদিও অল অসম কোচ রাজবংশী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক রণজিৎবাবুর দাবি, প্রশাসনের অনুরোধে তারা এগারোটা নাগাদ আন্দোলন তুলে নেন৷ কিন্তু সেই সময় তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করা আক্রাসুর কিছু সমর্থক রেল রোকো চালিয়ে যান৷

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমণ জানান, রেল রেকোর জেরে বিভিন্ন ষ্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন দাড়িয়ে পড়ে। দুপুর দেড়টার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন