মোগা মামলা থেকে অব্যাহতি নিলেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতি। মঙ্গলবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠার কথা ছিল মামলাটি। কিন্তু তার আগেই সোমবার এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি সতীশ কুমার মিত্তল এবং হরেন্দ্র সিংহ সিধু। তবে এর পিছনে কোনও নির্দিষ্ট কারণ দেখাননি তাঁরা। এর পর কোন বেঞ্চে মামলাটির বিচার হবে তা ঠিক করবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
গত সপ্তাহে পঞ্জাবের মোগায় চলন্ত বাসে শ্লীলতাহানির পর বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় এক কিশোরীকে। পথেই মৃত্যু হয় তার। ঘটনার পর সরকারের সমালোচনা করে পথে নামে বিরোধী দলগুলি। ঘটনায় রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর নাম জড়ানোয় বিতর্ক আরও বাড়ে। আজ, মহিলা যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৫ সদস্যের একটি প্যানেল গঠন করেছে পঞ্জাব সরকার। সরকার সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলের নির্দেশে গঠিত এই প্যানেলে আছেন মুখ্যসচিব, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র), পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব, তফসিল জাতি ও উপজাতি উন্নয়ন সচিব এবং পঞ্জাব পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল। রাস্তায় মহিলা যাত্রীরা কতটা সুরক্ষিত তা বিচার করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে এই কমিটি।
তবে মোগার ঘটনা নিয়ে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলনের পরেও পরিস্থিতি যে বিশেষ বদলায়নি তার প্রমাণ পাওয়া গেল রবিবার। ফের চলন্ত বাসে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুললেন এক মহিলা যাত্রী। এ বার ঘটনাস্থল খান্না। মোগা থেকে যার দূরত্ব মাত্র দু’ঘণ্টা। মহিলার অভিযোগ, রবিবার লুধিয়ানাগামী একটি বাসে উঠেছিলেন তিনি। বাসে তাঁর পাশে বসা বছর কুড়ির এক যুবক ক্রমাগত আপত্তিকর আচরণ করতে থাকে তাঁর সঙ্গে। বাসের কন্ডাক্টরের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানালে ছেলেটি অন্য আসনে গিয়ে বসে, কিন্তু সেখান থেকেই কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকে সে। মহিলার দাবি, সহ্য করতে না পেরে ওই যুবককে চড় কষান তিনি। এর পরেই বাস থেকে নেমে যায় হেনস্থাকারী। বাসের কন্ডাক্টরের কাছে অভিযোগ করলে সে মহিলার পাশে দাঁড়ানোর বদলে ওই যুবককে পালাতে সাহায্য করে। তখন মহিলা তাঁর স্বামীকে ফোন করলে তাঁর স্বামী পুলিশে খবর দেন। অভিযোগ, রাস্তায় পুলিশ বাসটিকে আটকাতে চাইলেও চালক বাস থামায়নি। পরে বাসের পিছনে ধাওয়া করে সেটিকে থামায় পুলিশ। চালক এবং কন্ডাক্টরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হেনস্থাকারীর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সোমবার মোগার ঘটনার প্রতিবাদে বন্ধ ডেকেছিল বিরোধী কংগ্রেস, আপ, পঞ্জাব পিপলস পার্টি এবং অন্যান্য কয়েকটি অরাজনৈতিক সংগঠন। মিশ্র সাড়া মিলেছে তাতে। সোমবার নিহত কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বহিষ্কৃত আপ নেতা যোগেন্দ্র যাদব এবং কংগ্রেস নেতা অমরেন্দ্র সিংহ। পঞ্জাবে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিও তোলেন অমরেন্দ্র।