আদালতে শিবকুমার। মঙ্গলবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
উবের চালক শিবকুমার যাদবকে মঙ্গলবার ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করল দিল্লির আদালত। আগামী ২৩ অক্টোবর, শুক্রবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে উবেরের তরফে বলা হয়েছে, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা পরিষেবা উন্নত করেছে।
গত ৫ ডিসেম্বর রাতে ট্যাক্সির মধ্যেই এক মহিলা যাত্রীকে ধর্ষণ করে শিবকুমার। গুড়গাঁওয়ের একটি সংস্থায় কর্মরত ওই মহিলা নৈশভোজ সেরে বসন্ত বিহার থেকে দিল্লির ইন্দ্রলোকে নিজের বাড়ি ফেরার জন্য উবের ট্যাক্সি ডেকেছিলেন। নির্যাতিতার বয়ানে, ট্যাক্সির মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঘুম ভাঙলে দেখেন, ট্যাক্সির পিছনের আসনে তাঁরই পাশে বসে রয়েছে চালক। গাড়িটি দাঁড়িয়ে জনশূন্য রাস্তায়। ট্যাক্সি থেকে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিবকুমার তাঁকে একের পর এক চড় মারতে থাকে, এমনকী গলাও টিপে ধরে— অভিযোগ ওই মহিলার। চিৎকার করে লোক ডাকার চেষ্টা করলে ওই মহিলার পরিণতি ‘নির্ভয়া’র মতো হবে বলে হুমকিও দেয় ট্যাক্সি চালক। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের ওই ঘটনার ভয়াবহতার কথা মনে করে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তাঁকে ধর্ষণ করার পরে ইন্দ্রলোকের বাড়িতে পৌঁছে দেয় শিবকুমার। সেই রাতেই পুলিশে অভিযোগ জানান মহিলা। ঘটনার দু’দিন পরে মথুরা থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই ট্যাক্সি চালককে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (২) (এম), ৩৬৬, ৫০৬ এবং ৩২৩ ধারায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। প্রতিটি অপরাধই প্রমাণিত হয়েছে। আইনজীবী মহলের ধারণা, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে তার। এমনকী জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কারাগারে থাকার রায়ও শোনাতে পারেন বিচারক।
মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিবকুমারের স্ত্রী এবং বাবা-মা। তবে এ দিন কেউই কথা বলতে পারেননি তার সঙ্গে। এর পর শিবকুমারকে পুলিশ ঘিরে ধরে আদালত থেকে বের করে নিয়ে যায়। ফলে পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেনি সে। এমনকী স্ত্রীকেও শিবকুমারের সঙ্গে কথা বলার কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। আদালত চত্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শিবকুমারের স্ত্রী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা গরিব। যাদের প্রচুর পয়সা রয়েছে তারাই সফল হয়েছে। তবে ঈশ্বর সব দেখছেন।’’
মঙ্গলবার আদালতে হাজির ছিলেন নির্যাতিতার বাবাও। তিনি বলেন, ন্যায় বিচার পেয়ে তাঁরা খুশি।