Kolkata Metro

Union Budget 2022: প্রকল্প রূপায়ণে ধীর গতি, কলকাতা মেট্রোয় বরাদ্দ বাড়াতে পারে অর্থমন্ত্রক

সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে যে, বহু ক্ষেত্রে রেলের পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলানো জরুরি। কিন্তু তার জন্য দরকার বিপুল বিনিয়োগ।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:১৯
Share:

কলকাতায় মেট্রো রেল সম্প্রসারণের কাজ এগোচ্ছে কার্যত শামুকের গতিতে। —ফাইল চিত্র।

প্রয়োজন যা, বরাদ্দ তার তুলনায় নিতান্ত অল্প। এই সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতায় মেট্রো রেল সম্প্রসারণের কাজ এগোচ্ছে কার্যত শামুকের গতিতে। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ কথা মাথায় রেখে আসন্ন বাজেটে এই মেট্রো রেল প্রকল্পের জন্য মোটা অঙ্কের বরাদ্দ ঘোষণার পথে হাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

Advertisement

সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে যে, বহু ক্ষেত্রে রেলের পরিকাঠামোর খোলনলচে বদলানো জরুরি। কিন্তু তার জন্য দরকার বিপুল বিনিয়োগ। কোভিডের কামড়ে বেহাল রাজকোষ থেকে যা করা শক্ত। সম্ভবত সে কথা মাথায় রেখেই এ বার বাজেটে খরচ কমানো এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সংস্কারের পথেও হাঁটতে চলেছে রেল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রেল মন্ত্রকের অধীনে থাকা একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সংযুক্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্র।

এ ছাড়া, রেলের দ্রুত বৈদ্যুতীকরণে বিশেষ জোর দেওয়া হতে পারে। ১০টি মতো নতুন ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের ঘোষণাও থাকতে পারে রেল সংক্রান্ত বাজেট নথিতে।

Advertisement

সম্ভাব্য ঘোষণা

কলকাতার মেট্রো প্রকল্পে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ বৃদ্ধি

১০টি নতুন ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন চালুর কথা

৬টি রেল সংস্থার সংযুক্তি

দু’বছরের মধ্যে পুরো রেলপথের বৈদ্যুতীকরণ

রেল সূত্রের খবর, এ বছর কলকাতার মেট্রো রেলের প্রকল্পগুলিতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ করতে পারেন নির্মলা। কারণ, তার রূপায়ণে ধীর গতির অন্যতম কারণ, ধারাবাহিক ভাবে বরাদ্দ কমে যাওয়া। এই ধীর গতি নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে রেলের হাতে শুধু পশ্চিমবঙ্গের মেট্রো প্রকল্প রূপায়ণ ও পরিষেবার দায়িত্ব রয়েছে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝে এত বছর পেরিয়েও সেগুলির কাজ এখনও চালু। অন্তত এ বার তাতে গতি আনতেই মোটা বরাদ্দের ভাবনা। সূত্রের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে রেলের উন্নয়নে সার্বিক পরিকল্পনাও ঘোষণা করতে পারেন নির্মলা।

উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের মুখে এই বাজেটে রেলে যাত্রিভাড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম বলেই ইঙ্গিত রেল কর্তাদের। ঘুরপথে কিছুটা বাড়লেও, দীর্ঘদিন রেলে সরাসরি ভাড়া বাড়েনি। এ বারও ভোটের কথা মাথায় রেখে সংস্কারমুখী ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস মোদী সরকারের পক্ষে দেখানো কঠিন বলে ধারণা অনেকের। উল্লেখ্য, এমনিতে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত রেল বোর্ডের হাতে দেওয়া থাকলেও, বাজেটে তা ঘোষণার ক্ষেত্রে নীতিগত ভাবে কোনও বাধা নেই।

সূত্রের মতে, এ বার রেল বাজেটে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে রেলের হাতে থাকা ছ’টি সংস্থার সংযুক্তিকরণ। ওই সংস্থাগুলির মধ্যে রেল টেল এবং আইআরসিটিসি-র কাজের ধরন প্রায় এক। একই ধরনের কাজ করে ব্রেথওয়েট ও রাইটস। তেমনই আলাদা সংস্থা হলেও, রেলের বিভিন্ন প্রকল্প নির্মাণের কাজ করে আরভিএনএল এবং ইরকন। ভবিষ্যতে কার্যকারিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিকে পাখির চোখ করে একই ধরনের কাজ করা সংস্থাগুলিকে মিশিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিচালনায় সুবিধার কথা মাথায় রেখে আরভিএনএল এবং ইরকন, রেল টেল ও আইআরসিটিসি-র সংযুক্তিকরণ এ বছরের মধ্যেই সেরে ফেলতে চায় রেল মন্ত্রক।

করোনা আবহে এখনই যাত্রী যাতে বেশি না বাড়ে, সেই কারণে সীমিত সংখ্যক ট্রেন চালানোরই পক্ষপাতী মন্ত্রক। সূত্রের মতে, সেই কারণে চলতি বছরে দূরপাল্লার রুটে নতুন ট্রেন বাড়ানোর সম্ভাবনা কম। তবে ১০টি নতুন ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনের ঘোষণা হতে পারে। যা সরাসরি না হলেও, ছুঁয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশ-সহ ভোটমুখী রাজ্যগুলিকে।

রেল সূত্রের মতে, গত কয়েক বছরের মতো এ বারও জোর দেওয়া হবে লাইন বৈদ্যুতীকরণে। দু’বছরের মধ্যে পুরো রেলপথ বৈদ্যুতীকরণের লক্ষ্য রয়েছে। দেশে মোট ৬৪,৬৮৯ কিলোমিটার ব্রড গেজ লাইন রয়েছে। যার মধ্যে গত আর্থিক বছর পর্যন্ত ৪৫,৮৮১ কিলোমিটার লাইনের বৈদ্যুতীকরণের কাজ শেষ হয়েছিল। চলতি আর্থিক বছরে লক্ষ্য তাকে ৫৬,৮৮১ কিলোমিটারে নিয়ে যাওয়া। রেল সূত্রের দাবি, এ ভাবে দু’বছরে দেশের পুরো রেলপথের বৈদ্যুতীকরণ হলে, বছরে প্রায় ১৩,৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে রেলের।

সূত্রের মতে, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও জোর দেওয়া হবে পরিকাঠামো উন্নয়নে। রেলের এক কর্তার কথায়, অতিমারিতে আয় ধাক্কা খেয়েছে রেলের। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি ট্রেনের ঘোষণার দিকে না গিয়ে এ বার বরং বৈদ্যুতীকরণ, নতুন লাইন, যাত্রী পরিষেবার উন্নতিতেই মনোনিবেশ করতে চায় রেল মন্ত্রক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন