হাতি সাইকেলে চেপে কুপোকাত করল বিজেপির নতুন হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’কে। যোগীর গড়ে বাজি মারলেন ‘বুয়া-বাবুয়া’, আর বিহারে জেলে বসে ক্ষমতা দেখালেন লালু। ত্রিপুরা জয়ের পর লম্ফঝম্প করা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ আজ জোড়া ধাক্কায় মুখ লুকোলেন।
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর, ফুলপুর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যের ছেড়ে যাওয়া লোকসভা আসন। ২০১৪-র মোদী-ঝড়ে লক্ষ লক্ষ ভোটে তাঁরা জিতেছিলেন। এ বারের উপনির্বাচনে উদাসীন জনতার ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তাতেই পাশা উল্টে গিয়েছে। জাত-পাত-ধর্মের জটিল সমীকরণকে পাশে রেখেই মায়াবতীর দলিত ভোট গিয়েছে অখিলেশের ঝুলিতে। দুই কেন্দ্রেই ধরাশায়ী বিজেপি।
এই প্রথম প্রমাণ হল, বিরোধীরা হাত ধরলে মোদীকে পরাস্ত করা সম্ভব। সদ্য কাল নৈশভোজে যে চেষ্টা শুরু করেছেন সনিয়া গাঁধী। রাতেই ফুলের তোড়া নিয়ে ‘বুয়া’ (পিসি)-র বাড়ি গেলেন অখিলেশ। দাবি করলেন, এই বোঝাপড়া আগামী দিনেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
জেতার পর সপা সমর্থকদের উল্লাস।
কিন্তু মায়া ও অখিলেশ মিললেও রাহুল গাঁধী হাত এগিয়ে দেননি। কংগ্রেসের জামানত জব্দ হয়েছে। রাহুল আজ মেনেছেন, বিজেপি-বিরোধী ক্ষোভের ভোট শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছেই যাবে। তবে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে দাঁড় করানোর কাজটি রাতারাতি হবে না। আর যোগীর উপলব্ধি— ‘অতি-আত্মবিশ্বাস’। মায়া-অখিলেশের ভোট মিলবে ভাবেননি। এর পর কংগ্রেসও হাত মেলাবে সপা-বসপার সঙ্গে। সুতরাং কৌশল বদলাতে হবে। কিন্তু অখিলেশ বলছেন, এই যোগীই সপা-বসপাকে ‘সাপ-ছুঁচো’র জোট বলেছিলেন। জবাব দিয়েছেন মানুষ। স্পষ্ট, মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমর্থন-ভিত অটুট লালুর, দেখাল বিহার
বিরোধী ঘাঁটি শক্ত হতেই তুলকালাম বিজেপিতে। কেউ বলছেন, যোগী নিজের নাক কেটে মোদীর যাত্রাভঙ্গ করলেন। আর যোগী শিবির বলছে, প্রার্থী বেছেছেন মোদী-শাহ। নিজেরা প্রচারেও আসেননি। যোগীর জনপ্রিয়তা বাড়তে দেখেই নেতৃত্ব তাঁর ডানা ছাঁটতে চাইছেন। বোঝাচ্ছেন, মোদী বিনে গতি নাই।
আরও পড়ুন: জোট-পথে মমতাকে পাশে চাইছেন রাহুল
ঘটনা যা-ই হোক, গো-বলয়ের দু’টি বড় রাজ্যে শুরু হল লোকসভার মহড়া। গত বার মোদী বলতেন, ‘‘অঙ্ক নয়, রসায়নই জয়ের মন্ত্র।’’ আজ অখিলেশ-মায়া দেখালেন অঙ্কও জয় আনে। গত লোকসভায় মোদী ভোট পেয়েছিলেন ৩১ শতাংশ। বাকি ৬৯ ভাগকে এক করে এখন তাঁকে ধাক্কা দেওয়ার হিসেব কষছেন বিরোধীরা।