কেনেথ রোজোফ
মোদী সরকারের অনুষ্ঠানের মঞ্চেই নোট বাতিলের সমালোচনা করলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কেনেথ রোজোফ।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক কেনেথ নগদকে অভিশাপ বলেই মনে করেন। তাঁর মতে, নগদ কমলে দারিদ্র কমবে। সেই কেনেথই আজ দিল্লিতে বলেছেন, ‘‘এ দেশে নোট বাতিল কয়েকটি দিক থেকে ত্রুটিপূর্ণ ছিল। আমি পাঁচ-ছয় বছর সময় নিয়ে বড় নোট বাতিলের পক্ষে সওয়াল করি। ভারতে সেটা রাতারাতি করা হয়েছে।’’
অর্থ মন্ত্রক প্রতি বছর ‘দিল্লি ইকনমিক্স কনক্লেভ’-এর আয়োজন করে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধন করে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি নোট বাতিলকে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কার বলে দাবি করেন। বলেন, এর ফলে আরও বেশি মানুষ করের আওতায় আসবেন। ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে। কিন্তু কেনেথের বক্তব্য, নোট বাতিলের ফলে সত্যিই ডিজিটাল লেনদেন বাড়ল কি না, তা বুঝতে অনেক বছর সময় লাগবে।
কেনেথ বলেন, খুব কম লোকেই বোঝেন যে, নতুন নোট আনতে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যায়। কারণ নোট যাতে সহজে জাল করা না যায়, সে জন্য বিশেষ প্রযুক্তির দরকার পড়ে। এ দেশে সব থেকে বড় সমস্যা ছিল, বাতিল নোট বদলে দেওয়ার মতো নতুন নোটই ছিল না।
নোট বাতিলের ফলে ছোট ব্যবসায়ী, শ্রমিক, চাষিরাই সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। কেনেথের বক্তব্য, ‘‘অন্য কারও ক্ষতি এড়াতেই নোট বাতিল নিয়ে ধীরে এগোনোটা জরুরি।’’
আরও পড়ুন:
হাত-পা কাটার হুমকি দিয়ে চিঠি কেরলের লেখককে
তাঁর মতে, অন্য দেশে এই নোট বাতিল অনেক ভাল ভাবে হয়েছে। যেমন, ইউরোপে ৫০০ ইউরোর, সিঙ্গাপুরে ১০ হাজার ডলারের নোট এবং অস্ট্রেলিয়ায় ১০০ ডলারের নোট বাতিল। এই সব নোটের মূল্য অনেক। খুব কম মানুষের হাতেই তা ছিল। সেই তুলনায় ভারতে ৫০০ টাকার নোটের মূল্য ৭ থেকে ৮ ডলার। যা প্রায় সকলের পকেটেই থাকে। কেনেথ বলেন, ‘‘হয়তো এ দেশে নোট বাতিলে দীর্ঘমেয়াদে লাভ হবে। কিন্তু নোট বাতিলে কী কী করা উচিত নয়, তা-ও এখানে দেখা গিয়েছে।’’
জেটলির বক্তব্য, নোট বাতিলের পিছনে কালো টাকা দূর করার মতো নৈতিক যুক্তিও আছে। কেনেথ পাল্টা বলেন, ‘‘নগদের ব্যবহার কমানোটা কোনও নৈতিক প্রশ্ন নয়। নগদ নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য রাখাটা দরকার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্যই নগদ থাকা জরুরি।’’