US Presidential Election 2020

‘আমার পূর্বপুরুষ ভারতে ছিলেন’, চেন্নাই-কলকাতায় বাইডেনদের খোঁজে

হবু প্রেসিডেন্ট নিজেই বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের শিকড় রয়েছে ভারতের মাটিতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ১৯:৪৮
Share:

জো বাইডেন। ফাইল চিত্র।

কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক কি ছিলেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পূর্বপুরুষ?

হবু প্রেসিডেন্ট নিজেই বিভিন্ন সময়ে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের শিকড় রয়েছে ভারতের মাটিতে। আর সেখান থেকেই উঠে এসেছে ভারতে থাকা কয়েকজন বাইডেন পদবীর মানুষের কথা। তার মধ্যে রয়েছে কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুলের প্রাক্তন এক প্রধান শিক্ষকেরও নাম। উঠে এসেছে মুম্বই এবং চেন্নাইয়ে বসবাস করা বাইডেনদের কথাও। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই ভারত যোগের সূত্রপাত অবশ্য পাঁচ দশক আগে।

১৯৭২ সাল। মাত্র ২৯ বছর বয়সে আমেরিকার সর্বকনিষ্ঠ সেনেটর হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। আজকে আমেরিকার হবু রাষ্ট্রপতি। সেনেটর নির্বাচিত হওয়ার পর শুভেচ্ছা জানিয়ে যে প্রথম ক’টি চিঠি তাঁর কাছে পৌঁছেছিল, তার একটি পাঠিয়েছিলেন অন্য এক বাইডেন। তবে আমেরিকা থেকে নয়। মুম্বই থেকে!

সেই চিঠির কথা এখনও তাঁর স্মৃতিতে অটুট। হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁর পরিবারের শিকড় চেন্নাইতে। ঠিক একই ভাবে বাইডেনেরও কি পূর্বপুরুষদের শিকড় রয়ে গিয়েছে এ দেশে? হবু প্রেসিডেন্ট নিজে তাই মনে করেন। বারাক ওবামার সহকারি হিসাবে ২০১৩ সালে ভারতে এসে মুম্বইয়ে বণিক সভার অনুষ্ঠানে সেই ভারত যোগের কথাই বলেছিলেন তিনি। মুম্বই থেকে পাওয়া চিঠির প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, ‘‘আমার ঊর্ধ্বতন পঞ্চম পুরুষ মুম্বইতে (তখনকার বোম্বে) এসেছিলেন। শুনেছি তিনি এ দেশেই পাকাপাকি থেকে গিয়েছিলেন কোনও ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করে।”

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মধ্যবিত্ত’ জো বাইডেনের সম্পত্তির পরিমাণ কত জানেন?

দু’বছর পরে আমেরিকায় ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের একটি সভায় তিনি তাঁর ভারত যোগের কথা আরেকটু বিস্তৃত ভাবে ব্যাখ্যা করে জানান, তাঁর পূর্বপুরুষ জর্জ বাইডেন ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজের ক্যাপ্টেন।

সম্প্রতি প্রাক্তন কূটনীতিবিদ এবং বর্তমানে লন্ডনের কিংস কলেজের অতিথি অধ্যাপক টিম উইলসি ‘গেটওয়ে হাউজ’ নামে একটি পত্রিকায় লিখেছেন, ‘জর্জ নয়। তাঁর দাদা ক্রিস্টোফার বরং ভারতে থেকে গিয়েছিলেন এমন তথ্য পাওয়া যায়।’ তিনি লিখেছেন, ‘ক্রিস্টোফার দীর্ঘদিন নাবিক হিসাবে কাজ করার পর ১৮৩৯ সালে লন্ডন থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হন। জীবনের শেষ ১৯ বছর তিনি ম্যাড্রাস (চেন্নাই)-এ কাটান।’ টিমের দাবি, ক্রিস্টোফারের ছেলে হোরেসিও কোম্পানির মাদ্রাস রেজিমেন্টে সেনা হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন এমন তথ্যও পাওয়া যায়। ‘ফ্যামিলিজ ইন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া’-র ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, হোরেসিও কলকাতাতেও এসেছিলেন। এবং তার পরবর্তী সময়ে কলকাতার লা মার্টিনিয়ার স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষকের পদবিও বাইডেন পাওয়া যায় বলে দাবি টিমের। তবে এ বিষয়ে লা মার্টিনিয়ার স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও তথ্য দিতে পারেনি। স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক কোনও বাইডেন পদবির কেউ ছিলেন কি না, তা জানাতে পারেননি।

তবে টিম তাঁর প্রবন্ধে দাবি করেছেন, ভারতে বেশ কয়েকজন বাইডেন পদবিধারী থাকলেও, তাঁর গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ক্রিস্টোফারই হতে পারেন জো বাইডেনের পূর্বপুরুষ। যদি আদৌ আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্টের পূর্বপুরুষদের কোনও ভারত যোগ থেকে থাকে। জো নিজেও এক সময়ে যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন মুম্বইয়ের পত্রপ্রেরক বাইডেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। ৫ বছর আগে তিনি জানিয়েছিলেন মুম্বইয়ের বাইডেন পরিবারের যোগাযোগের নম্বরও তিনি পেয়েছেন। তিনি তাঁদের ফোন করবেন বলেও জানিয়েছিলেন সেই সময়। তবে তারপর তিনি আদৌ যোগাযোগ করেছিলেন কি না, তা জানা যায় নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement