(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ করতে গিয়ে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট করবে না আমেরিকা। ওয়াশিংটনের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। তাঁর দাবি, ভারত এমন অনেক দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখে যাদের সঙ্গে আমেরিকার কোনও সম্পর্ক নেই। আমেরিকার ক্ষেত্রেও বিষয়টি তেমনই।
শনিবার বিমানে চেপে দোহার উদ্দেশে যাওয়ার পথে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকা কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে এমনটাই জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশসচিব। তাঁর কথায়, “এটি একটি পরিণত এবং বাস্তবসম্মত বিদেশনীতির অংশ।” রুবিয়ো বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের গভীর, ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা যদি কিছু (সম্পর্ক মসৃণের চেষ্টা) করি, তার জন্য ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব খোয়াতে হবে বলে আমি মনে করি না।”
ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতিতে আমেরিকা মধ্যস্থতা করেছে বলে শুরু থেকে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের ওই দাবি ভারত অস্বীকার করলেও, ইসলামাবাদ প্রথম থেকেই ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। সংঘর্ষ থামানোর জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত বলেও দাবি করেছিল পাক প্রধামন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সরকার। ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি পরবর্তী সময়ে হোয়াইট হাউসে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক সেরে এসেছেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। শাহবাজ়ের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে ট্রাম্পের। এ ছাড়া শুল্ক ঘিরে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে এক কূটনৈতিক টানাপড়েনও সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের উপর বর্তমানে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে আমেরিকা। সেই তুলনায় পাকিস্তানের উপর মার্কিন শুল্ক অনেকটাই কম, মাত্র ১৯ শতাংশ।
শনিবার রুবিয়ো বলেন, “ভারত এবং অন্য সব বিষয় নিয়ে চ্যালেঞ্জগুলির বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ অবগত। তবে যখন যেমন সম্ভব হবে সেই মতো অন্য দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থানের চেষ্টা করব আমরা। সন্ত্রাসদমনের বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। এখন সম্ভব হলে অন্য ক্ষেত্রগুলিতেও একসঙ্গে কাজ করার পথ প্রশস্ত করতে চাই আমরা।”
মার্কিন বিদেশসচিবের দাবি, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ শুরু হওয়ার আগে থেকেই ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ করার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে ওয়াশিংটন। তাঁর কথায়, আমেরিকা পুনরায় একটি ‘জোট’ বা ‘কৌশলগত বন্ধুত্ব’ তৈরি করতে চাইছে। বস্তুত, আগামী সোমবার মালয়শিয়ায় আন্তর্জাতিক জোট ‘আসিয়ান’-এর সম্মেলেনের পার্শ্ববৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে মুখোমুখি বসার সম্ভাবনা রয়েছে রুবিয়োর। সেখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, শুল্ক এবং রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তার আগে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রসঙ্গে রুবিয়োর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।