গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-র কাছে অভিযোগ জানাল আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের দাবি, ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যে আমেরিকা আমদানি শুল্ক বসানোর জবাব হিসাবে ভারত যে কিছু পণ্যে পাল্টা শুল্ক বসানোর যুক্তি দিয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। তবে সেই সঙ্গেই এ বিষয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবও খারিজ করেছে ওয়াশিংটন!
ভারত থেকে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের (প্রায় ২৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা) ইস্পাত আমদানি করে আমেরিকা। অ্যালুমিনিয়াম রফতানির পরিমাণ তার চেয়ে কিছুটা কম। গত ফেব্রুয়ারিতে অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতজাত পণ্যের উপর বাড়তি ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আদায় করার কথা জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। গত এপ্রিলে এই বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চেয়েছিল ভারত। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়নি ওয়াশিংটন।
এর পরেই ট্রাম্পের দেশ থেকে আমদানি করা ২৯টি পণ্যের উপর শুল্ক বসানোর জন্য ডব্লিউটিও-র কাছে বার্তা দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ডব্লিউটিও-র তরফে এ বিষয়ে ওয়াশিংটনকে অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়েছিল। ট্রাম্প সরকারের জবাব পাওয়ার পরে শুক্রবার ডব্লিউটিও জানিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনের ২৩২ নম্বর ধারা অনুযায়ী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন কোনও আলোচনায় রাজি নয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে জো বাইডেন প্রশাসনের আমলে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত যুক্তিতে ভারতের কয়েকটি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের উপরে যথাক্রমে ২৫% এবং ১০% আমদানি শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। এর পাল্টা হিসেবে ২০১৯ সালের জুনে আমন্ড, ওয়ালনাট-সহ আমেরিকার ২৮টি পণ্যের উপরে শুল্ক চাপায় ভারত। একই সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করে দিল্লি। ২০২০ সালে আপসের মাধ্যমে এই বিবাদের মীমাংসার সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। শুল্ক প্রত্যাহার করে দু’পক্ষই। আমেরিকার বাজারে ভারতীয় ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম প্রবেশের অনুমতি পায়। কিন্তু ট্রাম্পের জমানায় নতুন করে শুল্ক বসানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির ক্ষেত্রে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।