চিতোরের দুর্গ।
এই আয়না নিয়ে প্রচলিত অনেক গল্পকথা। সেই সবের কতটা যে সত্যি আর কতটা যে গল্প তা নিয়ে অন্য বিতর্ক রয়েছে। চিতোরের দুর্গে রানি পদ্মিনীর প্রাসাদের সেই স্মৃতিবিজড়িত আয়না এ বার দুষ্কৃতীদের নিশানায়।
রবিবার সন্ধেয় দর্শনার্থীর বেশে ঢুকে অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জনের একটি দল রানি পদ্মিনীর প্রাসাদের তিনটি আয়না ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। চিতোরের এসপি প্রসন্ন কুমার খামেসরা জানিয়েছেন, ওই ঐতিহ্যবাহী দুর্গের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ সংস্থার পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
কিন্তু কেন এই হামলা?
জানুয়ারি মাসের শেষে সঞ্জয় লীলা ভংসালী পরিচালিত ‘পদ্মাবতী’ ছবির শ্যুটিংয়ের সময় ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ তুলে সেটে ভাঙচুর চালিয়েছিল রাজপুত করণী সেনা একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠন। এর আগে জোধা আকবরের শ্যুটিংয়ের সময়েও তাদের উৎপাত করতে দেখা যায়। এই হামলার পিছনেও সন্দেহের তির তাদের দিকেই। কারণ দিন কয়েক আগেই ওই রাজপুত সংগঠনটির পক্ষ থেকে চিতোরের দুর্গকে বলা হয়েছিল, আয়নাগুলি সরিয়ে নিতে। না হলে তারা ভাঙচুর করবে। তবে রবিবারের হামলার পিছনে যে তারাই রয়েছে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
তবে হঠাৎ সব ছেড়ে আয়নার উপরে কোপ কেন? দর্শনার্থীদের কাছে বলা হয়, রানা রতন সিংহের সঙ্গে আপসের পরে এই আয়নায় রানি পদ্মিনীর মুখ দেখেছিলেন আলাউদ্দিন খিলজি। যে খিলজির হাত থেকে মান বাঁচাতে রানি পদ্মিনী তাঁর সহচরীদের সঙ্গে জহর ব্রত পালন করেছিলেন বলে কথিত আছে।
করণী সেনার সদস্য লোকেন্দ্র সিংহ কালভির দাবি, তাঁরা এই গালগল্পে বিশ্বাস করেন না। কারণ তাঁদের দাবি, ১৩০৩ সালে চিতোর আক্রমণ করেন খিলজি। আর ওই সময়ে আয়নার ব্যবহারের চলই ছিল না। মাত্র ৫০ বছর আগেই আয়নাগুলি ওই প্রাসাদে লাগানো হয়। এখন ওই আয়না দেখিয়ে দর্শনার্থীদের ভুল গল্প বলে বিভ্রান্ত করা হয় বলে তাদের অভিযোগ। কালভি আরও বলেন, শুধু রাজপুত নয়, অন্য সম্প্রদায়ও আয়নার এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন না।