উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। ফাইল চিত্র।
বিজ্ঞাপনের ‘ফাঁদ’ পাতা ভুবনে কে ঠিক বলছে আর কে মিথ্যে- তা ঠাহর করা মুশকিল। এক মাসেই ওজন কমিয়ে দেওয়া বা ফর্সা করে দেওয়ার গ্যারান্টি দেখে ভুলে অনেকেই ঠকেন। উপকারের বদলে অনেক সময় অপকারও হয় এই সব প্রডাক্টে। এ নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন চিকিত্সকরাও।
এটা একটা দিক। আর এক জাতীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় স্রেফ টাকা হাতানোর জন্য। আপনি একটা জিনিস কিনতে চেয়ে টাকা পাঠালেন। টাকাও গেল, জিনিসও এল না। ওয়েব দুনিয়ার বাড়বাড়ন্ত এবং অন লাইন পেমেন্ট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অপরাধ আরও বাড়ছে। এমনই এক ভুয়ো বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছেন দেশের খোদ উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু।
এ দিন রাজ্যসভায় সে কথা নিজেই কবুল করেছেন বেঙ্কাইয়া। ভুয়ো বিজ্ঞাপন কী ভাবে মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে, শুক্রবার রাজ্যসভায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছিল। তিনি নিজেও যে সেই ধরনের বিজ্ঞাপনের শিকার হয়েছেন, বেঙ্কাইয়া এ দিন সে কথা প্রকাশ্যে আনতে কুণ্ঠাবোধ করেননি।
আরও পড়ুন: শিমলায় কনস্টেবলের সঙ্গে কংগ্রেস বিধায়কের চড় চাপাটি
তিনি জানান, ওই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল তাদের প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ওজন কমে যাবে! বিজ্ঞাপনে ওই সংস্থার করা দাবিতে বিশ্বাসও করে ফেলেছিলেন তিনি। তত্ক্ষণাত্ ওষুধের অর্ডার দিয়ে ফেলেন। ওষুধের দাম ধার্য করা হয় এক হাজার টাকা। টাকাটা দিয়েও দেন নায়ডু।
তিনি জানান, ওষুধ হাতে পাননি। পরিবর্তে ওই সংস্থা থেকে তাঁকে একটি মেল করা হয়। সেই মেলে বলা হয়, আগের থেকেও আরও ভাল ট্যাবলেট আছে, যা খেলে তরতর করে দেহের ওজন কমবে। আর এর জন্যও দিতে হবে ১০০০ টাকা। শুধু তাই নয়, ওই মেলে আরও বলা হয়, দ্বিতীয় বার যে টাকাটা ধার্য করা হয়েছে সেই টাকা পাঠালে তবেই অর্ডার করা ওষুধ হাতে পাবেন!
আরও পড়ুন: মুম্বই অগ্নিকাণ্ড: নিজের জন্মদিনেই নিভল খুশির প্রাণ
এখানেই সন্দেহ হয় নায়ডুর। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানিয়ে উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকে চিঠি লেখেন তিনি। নায়ডুর কাছ থেকে চিঠি পেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে জানা যায় ওই সংস্থা নয়াদিল্লির নয়, আমেরিকার!
নায়ডুর এই অভিজ্ঞতা শোনার পর রাজ্যসভায় উপস্থিত সাংসদের সকলেই অবাক হয়ে যান। শেষ পর্যন্ত দেশের উপরাষ্ট্রতিকেও ভুয়ো বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিতে হল! যদিও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এ সব ভুয়ো বিজ্ঞাপন ও সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে।