Cyclone Mocha

প্রচণ্ড রূপ ধারণ করে মারাত্মক প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হল মোকা, শঙ্কা বাংলাদেশের একাংশে

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের বুকে আরও ঝড় তুলবে মোকা। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে গিয়ে হয়ে আরও ঘণীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৩ ০৮:৪৪
Share:

বাংলাদেশের হাওয়া অফিস তিনটি সমুদ্রবন্দর ও ১২টি জেলার জন্য মহাবিপদের সঙ্কেত দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। প্রতীকী ছবি।

বঙ্গোসাগরের বুকে ক্রমেই শক্তি বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝ়ড় থেকে আরও প্রচণ্ড রূপ ধারণ করেছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। পরিণত হয়েছে মারাত্মক প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। বিবৃতি জারি করে এমনটাই জানাল মৌসম ভবন। আবহবিদরা জানিয়েছেন, মধ্য বঙ্গোপসাগরের থেকে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে গিয়ে শুক্রবার রাতের দিকে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা মারাত্মক প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে মোকা।

Advertisement

এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত মারাত্মক প্রবল ঘূর্ণিঝড় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, বর্তমানে পোর্ট ব্লেয়ার বন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে মোকা। মায়ানমারের সিতওয়ে থেকে মোকা রয়েছে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের বুকে আরও ঝড় তুলবে মোকা। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে গিয়ে হয়ে আরও ঘণীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ঘূর্ণিঝড়টির। শনিবার দিন ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি সব থেকে বেশি থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

Advertisement

অতঃপর রবিবার দুপুরের দিকে শক্তি কিছুটা কমিয়ে মোকা অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসাবে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়নমারের কাউকপুর মধ্যে দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশ এবং মায়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ওই সময় ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিমি। সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫ কিমি।

মোকা বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে যাওয়ায় সে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে উদ্বেগ বাড়ছে। বাংলাদেশের হাওয়া অফিস তিনটি সমুদ্রবন্দর ও ১২টি জেলার জন্য মহাবিপদের সঙ্কেত দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা—মূলত এই তিনটি সমুদ্রবন্দরে মোকার প্রভাবে তছনছ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ওপার বাংলার আবহবিদরা। সতর্কতা জারি করা হয়েছে, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনি, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালি, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার জন্যও।

মোকা আবহে শুক্রবার থেকেই বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও। শুক্র, শনি এবং রবিবার সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। শনি এবং রবিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ত্রিপুরা এবং মিজোরামেও। রবিবার নাগাল্যান্ড, মণিপুর, দক্ষিণ অসমও ভারী বৃষ্টিতে ভিজতে পারে।

বাংলাদেশ এবং মায়নমারে ধ্বংসাত্মক রূপে দেখা দেওয়ার পূর্বাভাস থাকলেও মোকার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মোকা নিয়ে বাংলার জন্য তেমন কোনও সতর্কতা জারি করা হচ্ছে না। তবে শনিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সোমবার উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারেও বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদেরও সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দিঘা-সহ রাজ্যের বেশ কিছু উপকূল এলাকায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন