(বাঁদিকে) উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং আরএসএস সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবলে (ডানদিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় কোনওরকমের রদবদল করা যায় না বলে জানিয়ে দিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী শনিবার বলেন, ‘‘ভারতের সংবিধান ছাড়া অন্য কোনও সংবিধানের প্রস্তাবনা কখনও পরিবর্তিত হয়নি। কারণ সংবিধানের প্রস্তাবনা অপরিবর্তনযোগ্য।’’
এর পরেই উপরাষ্ট্রপতির মন্তব্য, ‘‘কিন্তু আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনা জরুরি অবস্থার সময়, ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান (সংশোধনী) আইন দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছিল। ‘সমাজতান্ত্রিক’, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘অখণ্ডতা’ শব্দগুলি যুক্ত করা হয়েছিল। আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে।’’
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর ‘সরকার্যবাহ’ (সাধারণ সম্পাদক) দত্তাত্রেয় হোসাবলে জানিয়েছিলেন, জরুরি অবস্থার সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার অসাংবিধানিক ভাবে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ এবং ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দ দুটি যোগ করেছিল। তাই ওই দুই শব্দ বাদ দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘‘জরুরি অবস্থার সময় কংগ্রেস গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। সে সময় সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে শব্দ যুক্ত করা হয়েছিল, তা কি আর বহাল রাখা উচিত!’’
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন ইন্দিরার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২১ মাসের ওই পর্বকে ‘ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায়’ বলেন আরএসএসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা হোসাবলে। এই আবহে ধনখড়ের মন্তব্য শনিবারের ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী-সহ কয়েক জন আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে শীর্ষ আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। কিন্তু সঙ্ঘের দাবি সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়ে ধনখড় আবার সেই বিতর্ক নতুন করে উস্কে দিলেন বলে মনে করছেন অনেকে।