বিজয় মাল্য। —ফাইল চিত্র।
‘পলাতক’ শব্দে আপত্তি নেই, কিন্তু কেউ তাঁকে ‘চোর’ বলুন, তা চান না প্রাক্তন ‘কিংফিশার’-কর্তা বিজয় মাল্য। সম্প্রতি উদ্যোগপতি রাজ শামানির একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৯০০০ কোটির আর্থিক তছরুপে অভিযুক্ত মাল্য। সেখানে তিনি দাবি করেন, তিনি ভারত ছেড়ে পালাননি। পূর্বনির্ধারিত কাজের জন্য দেশ ছাড়েন।
ওই অনুষ্ঠানে তাঁর নামের আগে ‘চোর’ শব্দ বসানো নিয়ে আপত্তি জানান মাল্য। তিনি বলেন, “আমি দেশে ফিরিনি যে সমস্ত কারণে, তার যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। ঠিক আছে, আপনি যদি তার পরেও পলাতক বলতে চান তো বলুন। কিন্তু ‘চোর’ (শব্দটা) কোথা থেকে এল? এখানে কোথা থেকে চুরি আসছে?”
২০১৬ সাল থেকে ব্রিটেনে রয়েছেন মাল্য। ভারতে ফেরা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যদি স্বচ্ছ বিচার এবং সম্মানজনক ভাবে জীবন কাটানোর বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়, তা হলে আমি বিষয়টি নিয়ে সত্যিই ভেবে দেখব।” এই প্রসঙ্গে মাল্য ব্রিটেনের একটি হাই কোর্টের রায়ের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলাতেই ব্রিটেনের ওই আদালত জানায়, ভারতের জেলগুলির পরিস্থিতি মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপিয়ান কনভেনশনের ৩ নম্বর অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করছে।
একদা নিজের বিমান সাম্রাজ্য ‘কিংফিশার’-এর পতন নিয়েও মুখ খুলেছেন মাল্য। জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণেই ২০০৮ সালে কিংফিশার বিমান সংস্থার বেহাল দশা হয়। মাল্যের এই সমস্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত কেউ আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ খোলেননি।
‘কিংফিশার’ উড়ান সংস্থার (বর্তমানে অস্তিত্বহীন) মালিক ছিলেন মাল্য। ১৭টি ভারতীয় ব্যাঙ্ক থেকে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের জন্য প্রায় ন’হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই টাকা মেটাতে না পারায় ২০১৬-র মার্চ মাসেই দেশ ছাড়েন কিংফিশার কর্তা। তাঁকে পলাতক ঘোষণা করা হয়। এর পরে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল লন্ডনে গ্রেফতার হন তিনি। ভারতে ঋণখেলাপ-সহ একাধিক মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কিন্তু গ্রেফতারির তিন ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জামিনে মুক্তিও পেয়ে যান তিনি। মাল্যকে দেশে ফেরানোর জন্য ভারত দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালালেও এখনও কোনও সুরাহা হয়নি।