রাস্তা তৈরির কাজে ব্যস্ত গ্রামবাসীরা। ডিমা হাসাওয়ে। বিপ্লব দেবের তোলা ছবি।
সরকারি টাকা বরাদ্দ করা না হলেও যে কাজ করা সম্ভব তা দেখিয়ে দিলেন ডিমা হাসাও জেলার বড়রবি, রাওটিলা, ইনচুইকাং প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামগুলি থেকে শহরে আসার কার্যত পায়ে চলা পথ ছাড়া কিছুই নেই। গ্রামবাসীদের অভিযোগ সরকার ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের উদাসীনতায় আজও এই সব গ্রামের মানুষকে পায়ে হেঁটে হাফলঙে আসতে হয়। পার্বত্য পরিষদের জনপ্রতিনিধিরাও এ নিয়ে কখনও কোনও পদক্ষেপ করেননি বলেই তাঁদের অভিযোগ।
সে কারণেই এ বার সরকার বা পরিষদের মুখাপেক্ষী না থেকে গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে রাস্তা নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে। আর এতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সমাজকর্মী আচিং জেমি। সবাই মিলে রাস্তা তৈরির জন্য প্রথম পর্বে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে কাজ শুরু করেছেন গত ২৪ নভেম্বর থেকে। আচিং জেমি বলেন, গ্রামের মানুষের আর্থিক সাহায্য এবং কায়িক পরিশ্রমে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই রাস্তা নির্মাণের জন্য অনেকবার সরকারি টাকা বরাদ্দ করা হলেও কোনও কাজই হয়নি। রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি কেটে ফেলে রেখে লাখ লাখ টাকা হাওয়া করেছেন দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসাররা।’’
বড়রবি, রাওটিলা, ইনচাইকুং গ্রামের মানুষ প্রধানত কৃষি কাজের উপরেই নির্ভরশীল। জুমচাষ করে শাকসব্জি ফলিয়ে তা বাজারে বিক্রি করেই পরিবার প্রতিপালন করেন তাঁরা। কিন্তু রাস্তা না থাকায় সেই ফসল বাজারে আনারও তাঁদের পক্ষে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণেই এই উদ্যোগ। প্রতিদিন প্রতিটি গ্রামের দশ জন করে শ্রম দান করছে এই রাস্তার জন্য। জেমির আশা, এই ঘটনা শুধু এই এলাকার মানুষকেই নয়, জেলার মানুষকেই উদ্বুদ্ধ করবে।