পর্যটকদের সাহায্য করতে গ্রামবাসীদের বাহিনী ঝাড়খণ্ডে

গত বছর শীতের ছুটিতে কলকাতা থেকে রাঁচির দশম জলপ্রপাতে সপরিবার বেড়াতে গিয়েছিলেন অনিন্দ্য বসু। গাড়ি ‘পার্কিং’ করার জন্য অনেক বেশি টাকা চেয়েছিল স্থানীয় কয়েক জন। প্রতিবাদ করলে শুরু হয় ঝামেলা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

রাঁচি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

গত বছর শীতের ছুটিতে কলকাতা থেকে রাঁচির দশম জলপ্রপাতে সপরিবার বেড়াতে গিয়েছিলেন অনিন্দ্য বসু। গাড়ি ‘পার্কিং’ করার জন্য অনেক বেশি টাকা চেয়েছিল স্থানীয় কয়েক জন। প্রতিবাদ করলে শুরু হয় ঝামেলা।

Advertisement

এ বছর মার্চে পলামুর বেতলা জঙ্গলে স্থানীয় যুবকদের ‘দাদাগিরি’র শিকার হন কলকাতার হাজরার দত্ত পরিবার। এলাকার উন্নয়নের নামে টাকা চেয়েছিল তারা। বিপাকে পড়েন দত্তবাবুরা।

শুধু এই দু’টিই নয়, ঝাড়খণ্ডে বিভিন্ন সময়ে এমন সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকদের অনেকেই। অভিযোগ উঠেছে পর্যটনকেন্দ্রের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে।

Advertisement

মাঝেমধ্যেই এ রকম খবর পৌঁছেছে পর্যটন দফতরে। এতে ঝাড়খণ্ডের পর্যটন-শিল্পে ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল দফতরের আধিকারিকদের। তা রুখতে উদ্যোগী হল রাজ্যের পর্যটন বিভাগ।

দফতর সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের যে সব পর্যটনকেন্দ্রে বেশি ভিড় জমে, সেখানে গ্রামবাসীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘স্টেট ট্যুরিজম ফোর্স’। ওই বাহিনীর সদস্যরা এক দিকে পর্যটকদের সুবিধা-অসুবিধার দিকে নজর রাখবেন। অন্য দিকে কেউ যাতে কোনও ঝামেলায় না পড়েন, সে দিকেও খেয়াল রাখবেন।

রাজ্যের পর্যটন সচিব অবিনাশ কুমার বলেন, ‘‘বর্ষা কাটলেই পর্যটকদের ভিড় জমবে ঝাড়খণ্ডে। পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে অনেক সময় পর্যাপ্ত পুলিশ থাকে না। সেই ফাঁক ভরাট করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে নতুন সুরক্ষা-বাহিনী গঠন করা হয়েছে।’’ পর্যটন নির্দেশক সুচিত্রা সিংহের বক্তব্য, ‘‘পর্যটন মরসুমে রোজগারের আশায় পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। আমরা তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট ভাবে আয়ের পথ খুলে দিতে চাইছি। এতে দু’পক্ষেরই সুবিধা হবে।’’

ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল কুমার বলেন, ‘‘শীতে পলামুর জঙ্গলে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকদের ভিড় থাকে। তাঁদের অনেকেই মাওবাদীদের ভয়ে থাকেন। স্থানীয় ভাবে গঠিত বাহিনীর লোকেরা তাঁদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবেন।’’

পর্যটন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ওই সব দলের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাতে এক দিকে পর্যটন মরসুমে গ্রামবাসীদের উপার্জন বাড়বে। তেমনই জোর করে পর্যটকদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা আদায়ের ঘটনাও বন্ধ করা যাবে। সহজে চিনে নেওয়ার জন্য ওই বাহিনীর সদস্যদের নির্দিষ্ট পোশাকও থাকবে।

পর্যটন সচিব বলেন, ‘‘পুজো ও শীতের ছুটিতেই স্টেট ট্যুরিজম ফোর্স পুরোদমে কাজে নামবে।’’ আরও জানান, অনেক সময় হোটেল বা স্থানীয় বেসরকারি পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তাই সেই জায়গার হোটেল ব্যবসায়ী, পর্যটন সংস্থার মালিকদের লাইসেন্স-সহ অন্য আইনি নথির প্রতিলিপি পর্যটন দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন