Tamil Nadu Stampede

তামিলনাড়ুতে পদপিষ্ট: ‘সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেননি, উচ্ছ্বাস আর আনন্দ মুহূর্তে বদলে গেল চিৎকার, স্বজন হারানোর কান্নায়!’

শনিবারের রাত তামিলনাড়ুর করুর সাক্ষী থাকল এমনই এক ভয়াবহ দৃশ্যের। কেউ হারিয়েছেন কন্যাকে, কেউ পুত্রকে, কেউ আবার স্ত্রীকে। স্থানীয়েরা মনে করতে পারছেন না, এ রকম বিপর্যয় আগে কখনও ঘটেছে কি না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৪৫
Share:

তামিলনাড়ুর করুরে ‘থলপতি’ বিজয়ের প্রচারসভায় মানুষের ঢল। ছবি: পিটিআই।

প্রচারগাড়ির মাথায় বানানো মঞ্চে উঠে তামিলাগা ভেটরি কাজ়াগম (টিভিকে)-এর প্রতিষ্ঠাতা নেতা তথা অভিনেতা বিজয় হাত নাড়তেই ভিড় থেকে আওয়াজ উঠল— থলপতি…থলপতি…থলপতি। তার পরই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস জনতার। কিন্তু সেই উচ্ছ্বাসই মুহূর্তে বদলে গেল স্বজনহারানো কান্নায়। অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের শব্দে ভরে উঠল এলাকা। ভিড়ের মধ্যে থেকে টেনে টেনে বার করা হল পায়ের নীচে চাপা পড়ে মানুষগুলিকে। নায়ককে কাছ থেকে দেখার উদ্দীপনায় প্রাণ গেল ১০ শিশু এবং ১৬ জন মহিলা-সহ ৩৯ জনের। হাসপাতালের আইসিইউয়ে ভর্তি ৫১। আহত শতাধিক।

Advertisement

শনিবারের রাত তামিলনাড়ুর করুর সাক্ষী থাকল এমনই এক ভয়াবহ দৃশ্যের। কেউ হারিয়েছেন কন্যাকে, কেউ পুত্রকে, কেউ আবার স্ত্রীকে। শনিবারের রাতে যে বিপর্যয় দেখল করুর, স্থানীয়েরা মনে করতে পারছেন না, এ রকম বিপর্যয় আগে কখনও ঘটেছে কি না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় তো নয়-ই, এর আগে কোনও ‘ম্যানমেড’ বিপর্যয় হয়নি বলেই জানাচ্ছেন করুরবাসী। বিজয়ের সভায় গিয়েছিলেন অবিনয় এস। সঙ্গে তাঁর কাকিমাও ছিলেন। লোকজনকে তাঁর ছবি দেখিয়ে বার বার জিজ্ঞাসা করেন, এই মহিলাকে কেউ দেখেছেন কি না। ভিড়ের ধাক্কায় বেসামাল হয়ে ছিটকে আলাদা হয়ে যান অবিনয় এবং তাঁর কাকিমা মাহেশ্বরী। তার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি। অবিনয় বলেন, ‘‘হঠাৎ একটা জোরালো ধাক্কা এল, ছিটকে পড়লাম। আমার উপর বেশ কয়েক জন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। কাকিমা কোথায় ছিটকে গিয়েছিল দেখিনি। দমবন্ধ হয়ে আসছিল। কোনও রকমে ভিড়ের নীচ থেকে শরীরটাকে ঠেলে বার করি।’’

এস মালিগা নামে এক মহিলা তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন এই দুর্ঘটনায়। তিনি বলেন, ‘‘বার বার বারণ করেছিলাম এই সভায় না যেতে। কিন্তু সেই যাওয়াই কাল হল আমাদের পরিবারের জন্য। আমাদের সকলকে অনাথ করে দিয়ে চলে গেল।’’ আরও এক প্রত্যক্ষদর্শী নন্দ কুমারের দাবি, ভিড় যে হবে সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তাও ছিল। কিন্তু ভিড় যে দ্বিগুণ হয়ে যাবে, সেটা প্রত্যাশিত ছিল না। ফলে স্বল্প পরিসরে জনতার চাপ বাড়তে থাকে। ‘থলপতি’ বিজয় নির্ধারিত সময়ে আসবেন, এটা সকলেই প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ায় ভিড় বাড়তে থাকে। লোকজনও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু বিজয় অনেক পরে আসেন। ফলে নায়ককে দেখার জন্য দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষায় থাকা লোকজনের উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে। আর তার জেরেই পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়।

Advertisement

পি শিবশঙ্করী নামে এক তরুণী বলেন, ‘‘চোখের সামনে আমার প্রতিবেশীকে ভিড়ের নীচে চাপা পড়ে যেতে দেখলাম। আমিও পড়ে গেলাম। আমাদের উপর একের পর লোক পড়ছিল। ক্রমশ নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছিলাম। চিৎকার করে সাহায্য চাইলাম। কেউ এগিয়ে এল না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement