Arvind Kejriwal

তিহাড়ে নিজের প্রাক্তন ডেপুটির পাশের সেলেই থাকবেন কেজরী, সুবিধা কী পাবেন, কী পাবেন না

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তিহাড়ের দু’নম্বর সেল আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কেজরীওয়ালের পাশের সেল, এক নম্বরে আছেন তাঁর মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য মণীশ সিসৌদিয়া।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩১
Share:

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।

দিল্লির আবগারি মামলায় অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আপাতত আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিহাড় জেলই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ঠিকানা। জেলবন্দি অবস্থায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রোজ কী করতে পারবেন এবং কী কী করতে পারবেন না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তিহাড়ের দু’নম্বর সেল আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। কেজরীওয়ালের পাশের সেল, এক নম্বরে আছেন তাঁর মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য মণীশ সিসৌদিয়া। আবগারি মামলাতেই মণীশকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ ছাড়াও দিল্লির প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন রয়েছেন সাত নম্বর সেলে। আর পাঁচ নম্বর সেলে আছেন আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। অন্য দিকে, ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) নেত্রী তথা তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা কে কবিতার জন্য বরাদ্দ তিহাড়ের মহিলা বিভাগের ছ’নম্বর সেল।

তিহাড়ের অন্য বন্দিদের মতোই রোজ ভোর সাড়ে ছ’টায় ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে কেজরীওয়ালকে। প্রাতরাশে তাঁকে দেওয়া হবে এক কাপ চা এবং কয়েক টুকরো পাউরুটি। তার পর স্নান করতে পারবেন তিনি। স্নানের পর কেজরীওয়াল ঘণ্টা দুয়েক সময় পাবেন তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য। আর যদি আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন থাকে, তবে যেতে পারবেন তিনি।

Advertisement

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে দুপুরের খাবার দেওয়া হবে কেজরীওয়ালকে। দুপুরের খাবারের মেনুতে থাকবে পাঁচটি রুটি বা ভাত, একটা সবজি এবং ডাল। রাতের খাবারের মেনুতেও একই পদ থাকবে আপ প্রধানের জন্য। দুপুরে খাওয়ার পরই নিজের সেলে বন্দি করে দেওয়া হবে তাঁকে। দুপুর তিনটে পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন তিনি। সাড়ে তিনটের সময় আবার এক কাপ চা এবং দু’টি বিস্কুট খেতে দেওয়া হবে কেজরীওয়ালকে।

বিকেল ৪টের সময় আবার নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। বিকেল সাড়ে ৫টার সময় রাতের খাবার দেওয়া হবে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে নিজের সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরের দিন সকাল পর্যন্ত সেখানেই বন্দি থাকবেন কেজরীওয়াল।

মোটামুটি অন্য বন্দিদের মতোই সুযোগ-সুবিধা পাবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের যা যা বিধি-নিষেধ আছে, তা-ই বহাল থাকবে। তবে তিনি কিছু বাড়তি সুযোগও পাবেন। যেমন, তাঁর সেলে টিভির ব্যবস্থা করা থাকবে। সংবাদ, বিনোদন এবং খেলাধূলা-সহ ১৮-২০টি চ্যানেল দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কেজরীওয়ালকে। তা ছাড়া তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে সারা দিনই চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীর ব্যবস্থা থাকবে। বন্দি অবস্থায় তাঁর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।

অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে কেজরীওয়ালের জন্য বিশেষ খাবারের তালিকার ব্যবস্থা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, সেলে তিনটি বই যাতে সঙ্গে রাখতে পারেন কেজরীওয়াল তার আবেদনও জানানো হয়েছে। সেই বইগুলি হল, ভগবদ্‌গীতা, রামায়ণ এবং সাংবাদিক নীরজা চৌধুরীর লেখা প্রধানমন্ত্রীদের সম্পর্কিত একটি বই। তবে জেলে তিনি কাদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর আগে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেজরীকে ন’বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রতি বারই হাজিরা এড়িয়েছেন। গত ২১ মার্চ ছিল নবম বারের হাজিরার দিন। ইডি দফতরে না গিয়ে কেজরী সে দিন গিয়েছিলেন হাই কোর্টে। রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তার পর ওই দিন রাতেই দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকেরা। ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কেজরীওয়ালকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন