নিজস্বী নেশায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করছে! লোকসভায় শুক্রবার ওই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নিজস্বী-প্রিয় নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে। ঘটনাচক্রে, নিজস্বী-প্রশ্ন তুললেন বিজেপিরই দুই সাংসদ।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিজস্বী-প্রীতি সর্বজনবিদিত। তবে নিজস্বী নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর দলেরই দুই সাংসদ বিহারের ওমপ্রকাশ যাদব এবং উত্তরপ্রদেশের হরিশ দ্বিবেদী। তাঁদের প্রশ্ন, নিজস্বী-নেশাগ্রস্তদের চিকিৎসার জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর কত জনই বা ওই নেশায় আক্রান্ত? নিজস্বী-নেশায় আক্রান্ত কত জন পৌঁছেছেন মনোবিদের দরজায়!
সাংসদের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুসারে, নিজস্বী-নেশা কোনও অসুখ নয়। তাই কত জন নিজস্বী-নেশাগ্রস্ত ও কত জন মনোবিদের পরামর্শ নিয়েছেন, তা নিয়ে সরকারের কাছে তথ্য নেই।’’
২০১৫ সালে নিজস্বী তুলতে গিয়ে ভারতে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত মে মাসে ওড়িশায় একটি আহত ভালুকের সঙ্গে নিজস্বী তুলতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ভালুকটির আচমকা আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়। গত বছরের অক্টোবরে রেললাইনে নিজস্বী তোলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছিলেন তিন কলেজ পড়ুয়া। দিউয়ে সমুদ্র সৈকতে নিজস্বী তুলতে গিয়ে জলে তলিয়ে গিয়েছিল চার তরুণ। এমন হাজারো ঘটনা। তার পরেও অবশ্য নিজস্বী তোলায় বিরাম নেই!
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ভারতে নিজস্বীকে জনপ্রিয় করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অবদান কম নয়। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর আঙুলে ভোটের কালি এবং দলীয় প্রতীক দেখিয়ে নিজস্বী তুলেছিলেন মোদী। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সেই শুরু! তার পর থেকে দেশে-বিদেশে যেখানে যাঁর সঙ্গে সুযোগ পেয়েছেন মোদী নিজস্বী তুলেছেন। সেই নিজস্বী-ধারা এখনও অব্যাহত!
বিজেপি সাংসদদের তোলা প্রশ্নের পর বিরোধী শিবিরের খোঁচা, এটা কি মোদীর বিরুদ্ধে নিজস্বী-জিহাদ!