বিমান দুর্ঘটনার পর অহমদাবাদে উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
আচমকা তীব্র শব্দ। ভূমিকম্পের মতো থরথর করে কেঁপে উঠেছিল চারদিক। কয়েক মুহূর্ত পর্যন্ত কেউ বুঝেই উঠতে পারেননি, কী ঘটেছে। তার পর গল গল করে বেরিয়ে আসে কালো ধোঁয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনটাই বর্ণনা দিচ্ছেন অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার। জানাচ্ছেন, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা শুধু দেখেছেন লাশ আর লাশ।
অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দর থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে উড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১ বিমান। গন্তব্য ছিল লন্ডন গ্যাটউইক বিমানবন্দর। কিন্তু ওড়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। নিকটবর্তী বিজে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হস্টেল ভবনের গায়ে ধাক্কা খায় বিমানটি। তাতে যাত্রী এবং বিমানকর্মী মিলিয়ে মোট ২৪২ জন ছিলেন। অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে ৩০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ।
ঘটনাস্থল থেকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম। আচমকা প্রচণ্ড একটা শব্দ শুনলাম। মনে হল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। কী হয়েছে, দেখতে যখন বাইরে বেরোলাম, তত ক্ষণে কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ। মোটা কালো ধোঁয়া। আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে চলে আসি। দেখি চারদিকে শুধু লাশ আর লাশ। ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে।’’
ভেঙে পড়ার পরেই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলের যে সমস্ত ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে বিরাট আগুনের গোলা। তার পরেই কালো ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। ভিডিয়োতে আরও দেখা গিয়েছে, মাটি ছাড়ার পর কিছু দূর উঠেছিল বিমানটি। কিন্তু আর উঠতে পারেনি। ক্রমশ সেটি নামতে শুরু করে। পাইলট যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন, ভিডিয়োতে সেই ইঙ্গিত মিলেছে। তার পরমুহূর্তেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। লোকালয়ের উপর বিমান দুর্ঘটনার ফলে হতাহতের সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিকটবর্তী হাসপাতালে। ডাক্তারদের যে হস্টেলে বিমানটি ধাক্কা খেয়েছে, সেখানেও বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। বিমানে ১৬৯ জন ভারতীয় ছিলেন। এ ছাড়া ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, সাত জন পর্তুগিজ নাগরিক এবং এক জন কানাডিয়ানও ওই বিমানে ছিলেন।