পর্যটকেরা ফের কবে আসবেন, অপেক্ষায় ভূস্বর্গ

টানা ১৫ দিন জলমগ্ন থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরতে চাইছেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা। সবার মুখে মুখে ফিরছে একটাই প্রশ্ন। ফের কবে আগের মতো পর্যটকেদের দেখা মিলবে? পেশায় শিকারাচালক সুভান ৭ সেপ্টেম্বরের পর আজ সকালেই প্রথম শিকারা নিয়ে বেরিয়েছেন। বললেন, “ঝিলমকে ওই ভাবে ফুঁসতে আগে দেখিনি। জন্ম থেকেই আমি এখানকার বাসিন্দা। ডাল লেকের জলস্তর অত বাড়তে পারে কখনও ভাবিনি। খুব ভয়ে পেয়েছিলাম ওই দৃশ্য দেখে।”

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৯
Share:

বৃষ্টি থেমেছে। ভিজে জুতো বাইরে এনে রোদে শুকোতে দিয়েছেন দোকানিরা। শুক্রবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।

টানা ১৫ দিন জলমগ্ন থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরতে চাইছেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা। সবার মুখে মুখে ফিরছে একটাই প্রশ্ন। ফের কবে আগের মতো পর্যটকেদের দেখা মিলবে?

Advertisement

পেশায় শিকারাচালক সুভান ৭ সেপ্টেম্বরের পর আজ সকালেই প্রথম শিকারা নিয়ে বেরিয়েছেন। বললেন, “ঝিলমকে ওই ভাবে ফুঁসতে আগে দেখিনি। জন্ম থেকেই আমি এখানকার বাসিন্দা। ডাল লেকের জলস্তর অত বাড়তে পারে কখনও ভাবিনি। খুব ভয়ে পেয়েছিলাম ওই দৃশ্য দেখে।”

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতেই রাজ্যের আবহাওয়া দফতর থেকে জারি হয়েছিল বন্যার সতর্কতা। তাই অনেকেই নিজের বাড়ি ছেড়ে নেহরু পার্কের দিকে চলে যান। তার পর দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে ৭ সেপ্টেম্বর জলস্তর বেড়ে যায় ঝিলম, দুধগঙ্গা নদী এবং ডাল লেকের। প্লাবিত হয় সংলগ্ন গ্রামের পর গ্রাম। বিচ্ছিন্ন হয় টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিদ্যুৎও ছিল না। কার্যত গোটা দেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে জম্মু ও কাশ্মীর।

Advertisement

শ্রীনগরের হাউসবোট মালিক সংগঠনের প্রাক্তন এক কর্তা জানালেন, ডাল লেকের আকর্ষণে প্রতি বছর অনেক পর্যটক আসেন। সেই ডাল লেকই ১৫ দিনে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৮০০টি শিকারা চলত প্রতিদিন। সেই ৮০০ শিকারার মধ্যে ২০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার কবে আগের মতো পযর্টক আসবে, জানতে চাইছেন অনেকেই।

আলতাফ নামে অপর এক শিকারাচালক দুঃখ করে বলছিলেন, “এই সময় প্রতি বছর কত পর্যটকেরা আসেন। এ বছর দেখুন, ডাল লেক পুরো ফাঁকা। আমাদের রুজিরুটির কী হবে?” তিনি জানালেন, খুব কষ্টে নিজের শিকারাটি রক্ষা করতে পারলেও বাড়িটিকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। তাই সবই আবার নতুন করে শুরু করতে হবে তাঁকে।

রাজ্য সরকার জানায়, উদ্ধারকারীরা ২৮০ জনের দেহ উদ্ধার করেছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকায় নেই আর কারও নাম। তাই আশ্বস্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আর বাড়তে নাও পারে। শুধুমাত্র অনন্তনাগেই ১৫০০-র বেশি বাড়ি ভেঙেছে। তবে রাজ্যে কোন ক্ষেত্রে কত ক্ষতি হয়েছে তা জানতে সংশ্লিষ্ট দফতরে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

ওমর আবদুল্লা জানান, কৃষি দফতরের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বন্যায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর চাষজমি ভেসে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকার শস্য। রাজ্যের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বিভাগের এক কর্তা জানান, জল জমে থাকায় বেশ কিছু দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে এখন আবার তা স্বাভাবিক হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন