Cough Syrup Row

বিশ্বে কোথাও ‘দূষিত’ ওই তিন কাশির সিরাপ বিক্রি হচ্ছে কি? নজরদারি চালানোর পরামর্শ হু-র, জারি সতর্কবার্তা

সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় বেশ কয়েক জন শিশুর মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। কাশির ‘বিষাক্ত’ সিরাপ খাওয়ার ফলেই তাদের কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, রাজস্থানেও একই কারণে কয়েকটি শিশুমৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২৮
Share:

কাশির ওষুধ নিয়ে সতর্কতা জারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘বিতর্কিত’ কাশির সিরাপ নিয়ে এ বার সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। চিহ্নিত তিনটি কাশির ওষুধের ব্যবহার নিয়ে বিশ্বব্যাপী এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেই তিন কাশির সিরাপ হল— কোল্ডরিফ, রেসপিফ্রেস টিআর এবং রিলাইফ। বিভিন্ন দেশের জাতীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে মূলত এই তিন কাশির সিরাপের বিষয়ে সতর্ক করার হয়েছে। যদি কোনও দেশে ওই ‘বিতর্কিত’ সিরাপগুলির ব্যবহারের খোঁজ মেলে, তবে অবিলম্বে তা নিয়ে পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে হু।

Advertisement

হু-র জারি করা সতর্কবার্তায়, দেশের অনিয়ন্ত্রিত বাজারগুলির উপর নজরদারি বৃদ্ধির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ওই কাশির সিরাপগুলির নির্দিষ্ট কিছু ব্যাচে দূষিত পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। সেই সব ব্যাচের ওষুধগুলির ব্যবহার বন্ধের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় বেশ কয়েক জন শিশুর মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। কাশির ‘বিষাক্ত’ সিরাপ খাওয়ার ফলেই তাদের কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু মধ্যপ্রদেশ নয়, রাজস্থানেও একই কারণে কয়েকটি শিশুর মৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ। তার পরেই একে একে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য ‘বিতর্কিত’ কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ করেছে। এই নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই নড়েচড়ে বসে হু। শিশুমৃত্যুর সঙ্গে নাম জড়ানো কোনও কাশির সিরাপ বিদেশে রফতানি হয়েছে কি না, তা দিল্লির থেকে জানতে চেয়েছিল তারা। তার জবাবে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই) হু-কে জানিয়েছে, ভারত থেকে কোনও দূষিত কাশির সিরাপ রফতানি করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ ভাবে কোনও রফতানিরও প্রমাণ নেই। হু তার সতর্কবার্তায় সেই কথাও উল্লেখ করেছে।

Advertisement

ডিসিজিআই রফতানি নিয়ে তথ্য দেওয়ার পরেও হু সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছে। দেশের ওষুধ সরবরাহ বাজারগুলি এবং বিপণী শৃঙ্খলের উপর নজরদারি চালানোর পক্ষেই সওয়াল করেছে হু। অসুস্থদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে দূষিত কাশির সিরাপ শনাক্ত করা এবং তার বিপণন বন্ধের উপর জোর দেওয়া উচিত।

কাশির ‘বিষাক্ত’ সিরাপের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে তদন্তের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডাকে চিঠি লিখেছেন তাঁরা। কাশির সিরাপ বিতর্কে সিবিআই তদন্তের আর্জিতে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও দায়ের হয়েছে।

পাশাপাশি, বিতর্কিত কাশির সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ প্রস্তুতকারক সংস্থা স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যাল্‌স-এর যোগসূত্র ধরে তামিলনাড়ুর একাধিক জায়গায় অভিযানও করে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। স্রেসান ফার্মার মালিক জি রঙ্গনাথনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। ওই সংস্থার কাশির সিরাপটির নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কোল্ডরিফে ৪৮.৬ শতাংশ ডাই-ইথাইল গ্লাইকল (ডিইজি) ছিল, যেখানে অনুমোদিত সীমা মাত্র ০.১ শতাংশ। ডিইজি একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যা কিডনি বিকল করে দিতে পারে। লিভার এবং স্নায়ুতন্ত্রেরও মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement