রাইসিনা হিলসের পরের বাসিন্দা কে হবেন, তা স্থির করার নির্ঘণ্ট আজ ঘোষণা করে দিল নির্বাচন কমিশন। শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে যদি ঐকমত্য না হয়, তা হলে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোট হবে ১৭ জুলাই। আর নতুন রাষ্ট্রপতি রাইসিনা হিলসের বাসভবনে পা দেবেন তার ঠিক এক সপ্তাহ পরে।
আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি জারির পরে ২৮ জুনের মধ্যে মনোনয়ন পেশ করতে হবে। ফলে আর তিন সপ্তাহের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে প্রার্থী স্থির করার জন্য শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সনিয়া গাঁধীর আমন্ত্রণে ১৭টি বিরোধী দলের নেতারা বৈঠক করে ইতিমধ্যেই স্থির করেছেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়কে যদি ফের প্রার্থী করেন নরেন্দ্র মোদী, তা হলে তাঁরা সমর্থন করবেন। আর তা না হলে নিজেদের প্রার্থী দেবে বিরোধীরা। ফলে রাইসিনা হিলসের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীর দৌড়ে কে বা কারা রয়েছেন, সামনের সপ্তাহের মধ্যে সেই ছবি স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: সিপিএম দফতরে হিন্দুসেনা
বিরোধী প্রার্থী কে হবেন— তা ঠিক করতে ইতিমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ভোটকে সামনে রেখে দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর উদ্যোগে যে ১৭টি বিরোধী দল একজোট হয়েছিল, তাদের থেকে প্রতিনিধিদের বেছে নিয়ে ওই কমিটি গড়া হয়েছে। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ওই কমিটি ফের আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবে। আমরা রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজনৈতিক ভাবে লড়ব। দু’টি ক্ষেত্রেই ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় রয়েছে— এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী করা হবে।’’
প্রণববাবুর নাম নিয়ে শাসক শিবির থেকে আপত্তি এলে বিকল্প হিসেবে গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর কথা ভাবা হয়েছে। বামেরা প্রাথমিক ভাবে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গাঁধী পরিবারের এই সদস্যের নামে সায় রয়েছে সনিয়া-মমতারও। গোপালকৃষ্ণ প্রসঙ্গে সীতারাম আজ বলেন, ‘‘তিনি ভীষণ ভাবেই দৌড়ে রয়েছেন।’’ বিরোধীদের কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘অপেক্ষা করছি শাসক দল কবে প্রার্থী ঘোষণা করে। শাসক দলের পদক্ষেপ দেখেই প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিরোধীরা।’’
সীতারাম আজ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রতিবারই শাসক দল বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা করে। সিপিএমের নেতার অভিযোগ, ‘‘এ বার সেরকম কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না শাসক শিবির।’’
আসলে সংখ্যা যে হেতু অনুকূলে, তাই এখন ঐকমত্যের ধার ধারছে না বিজেপি। অমিত শাহ আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারের তিন বছর পূর্তি তথা মোদী উৎসব চলবে। তার পরে রাষ্ট্রপতির প্রার্থী নিয়ে প্রথমে দল ও তার পরে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। আত্মবিশ্বাসী অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ১৭টি দল জোট করলেও প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকবে বিজেপির প্রার্থী। সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের শেষে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা শুরু করবে বিজেপি।