নাকের ডগায় নজিরবিহীন পুলিশি বিক্ষোভ, কোথায় অমিত? প্রশ্ন বিরোধীদের

নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আমলে সিবিআই কর্তাদের মধ্যে লড়াই দেখেছে দেশবাসী। সাক্ষী থেকেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে সংঘাতেরও।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

অমিত শাহ কোথায়? খাস রাজধানীতে নজিরবিহীন পুলিশ বিক্ষোভ নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখন কোথায় তিনি? প্রশ্ন তুলে সরব বিরোধীরা। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের পর থেকেই বিজেপির ঘরোয়া মহলে বল্লভভাই পটেলের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছিল অমিত শাহকে। সেই তাঁর নাকের ডগায় আজ যে ভাবে দিল্লি পুলিশের বিদ্রোহের আভাস পাওয়া গেল, তা থামাতে তিনি কেন ব্যর্থ হলেন, তা নিয়ে জবাব চেয়েছে কংগ্রেস আর আম আদমি পার্টি।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আমলে সিবিআই কর্তাদের মধ্যে লড়াই দেখেছে দেশবাসী। সাক্ষী থেকেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে সংঘাতেরও। এ বার দিল্লি পুলিশের পদস্থ কর্তা বনাম নিচুতলার কর্মীদের প্রকাশ্য বিক্ষোভে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হল গোটা দিল্লি জুড়ে। দিল্লির পুলিশ কমিশনার অমূল্য পট্টনায়ক বাহিনীর শীর্ষে থাকলেও, দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় বাহিনীর রাজনৈতিক প্রধান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘স্বাধীনতার ৭২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। দিল্লিতে পুলিশকে প্রতিবাদে নামতে হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সারা দিন কোথায়?’’

দীর্ঘ দিন ধরে দিল্লি পুলিশের দায়িত্ব তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে সরব অরবিন্দ কেজরীবালের দল। আজ অমিতকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন আপ নেতৃত্ব। দলের নেতা রাঘব চড্ডা বলেন, ‘‘অন্য কোনও রাজ্য হলে এটা সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়ার পরিস্থিতি হিসেবে গণ্য হত। দল জানতে চায় এই পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায়?’’

Advertisement

শাহ অবশ্য দিনভর দিল্লিতেই ছিলেন। মন্ত্রকের সূত্র জানিয়েছে, একাধিক বার ফোনে কথা বলা ছাড়াও বিকেলের দিকে পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের মতে, কর্মীদের ক্ষোভ মেটাতে শাহের সঙ্গে পরামর্শের পরেই দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে এই সংক্রান্ত মামলার ব্যাখ্যা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি পুলিশ। আবেদনে জানতে চাওয়া হয়, কেন অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। শনিবার তিসহাজারি কোর্টে কী ঘটেছিল সে সম্পর্কে রিপোর্টও আজ মন্ত্রকে জমা দেয় দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে দিল্লি হাইকোর্টে আর্জি জানানো হয়, তিসহাজারির ঘটনায় আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার নির্দেশ যেন পরবর্তী ঘটনায় প্রযোজ্য না হয়।

অগস্ট মাসে কাশ্মীরে যখন ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হয়েছিল, তখন উপত্যকার পুলিশ কর্মীরা বিদ্রোহী হতে পারেন বলে আশঙ্কা জানিয়ে গোয়েন্দারা রিপোর্ট দিয়েছিলেন অমিতকে। যা ঠেকাতে উপত্যকা জুড়ে নামানো হয় আধা সেনা। কিন্তু মন্ত্রীর ঘরের মাঠ দিল্লিতেই যে পুলিশের মধ্যে এত ক্ষোভ-অসন্তোষ জমেছিল, তা কেন জানতে ব্যর্থ হলেন গোয়েন্দারা? এ প্রশ্নও আজ উঠেছে দিনভর। আপের রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহের প্রশ্ন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি রাজধানীই সামলাতে না পারেন, গোটা দেশ সামলাবেন কী করে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন