দেশের প্রধান বিতারপতি বিআর গবই। — ফাইল চিত্র।
ট্রাইব্যুনাল সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে আবার স্থগিতাদেশ চাওয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানির উপর রুষ্ট হন প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমি অবসর না-নেওয়া পর্যন্ত কেন স্থগিতাদেশ চাইছেন না?’’ প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, একে বারে ২৪ নভেম্বরের পরেই শুনানির জন্য আবেদন করতে পারেন! তখন অন্য এক জন নতুন বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব নেবেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি যখন হাই কোর্টে ওকালতি করতেন, তখন কী ভাবে মামলায় যোগ দিতেন, তারও ব্যাখ্যা দেন প্রধান বিচারপতি।
এই মামলায় কেন্দ্রের হয়ে সওয়াল করার কথা ছিল অ্যাটর্নি জেনারেল ভেঙ্কটরামানির। কিন্তু বৃহস্পতিবারের শুনানিতে তিনি থাকতে পারেননি। এসএসজি ঐশ্বর্য ভাটির মাধ্যমে তিনি আবেদন করেন, যাতে শুনানি স্থগিত করা হয়। সোমবার শুনানির তারিখ দিলে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন। আগেও দু’বার একই ভাবে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল, যা মঞ্জুরও হয়। কেন্দ্রের আবেদনে বিরক্ত হন প্রধান বিচারপতি।
অতীতে এই মামলার শুনানি পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। যদিও প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সেই অনুরোধ খারিজ করে দেয়। তর পরে আবার শুনানি স্থগিতের আবেদনে বিরক্তিপ্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, মামলার শুনানি ২৪ নভেম্বরের পরে নিয়ে যাওয়ার কৌশল মনে হচ্ছে। আদালতের প্রতি ন্যায়বিচার হচ্ছে না।
কেন্দ্রের আইনজীবী ভাটির উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনি যদি ২৪ নভেম্বরের পরে শুনানি চান, তবে সেটা খোলাখুলি বলুন। এ ভাবে কৌশল অবলন্বন করা উচিত নয়।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের মাঝে মাঝেই বলা হয় এজি আন্তর্জাতিক শুনানিতে ব্যস্ত। তার মধ্যেই আবার এই মামলার শুনানির মাঝপথে মধ্যরাতে সেটিকে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানোর আবেদন করা হয়।’’
তার পরেই প্রধান বিচারপতি তাঁর হাই কোর্টে ওকালতির সময়কার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, যদি তাঁরা কোনও বেঞ্চে কোনও মামলার শুনানিতে সহকারী হিসাবে কাজ করতেন, তখন অন্য কোনও মামলা হাতে নিতেন না। ছেড়ে দিতেন মামলা। প্রধান বিচারপতি মনে করেন, হাই কোর্ট যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুনানি সম্পন্ন করতে পারে, তার জন্য আইনজীবীদের দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। শুধু হাই কোর্ট নয়, সব আদালতের ক্ষেত্রেই একই মনোভাব রাখার দরকার বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি গবই। কেন্দ্রের আবেদনে বিরক্ত হলেও শেষপর্যন্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও ট্রাইব্যুনাল সংশোধনী আইনের বৈধতা সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি দিন সোমবার ধার্য করেছেন তিনি।